টীকা লেখার নিয়ম | পাঠ টীকা লেখার নিয়ম
টীকা লেখার নিয়ম বা কিভাবে টীকা লেখা যায় এই বিষয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। অনেকের চাকরি পরীক্ষায় টিকা লিখতে বলে থাকে। তখন তারা বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকেন কিভাবে খুব সহজে টীকা লিখবো।তাই আজকের পোস্টে টীকা লেখার নিয়ম বা কিভাবে টিকা লিখা যাই এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা এই বিষয়ে জানতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে করবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
টীকা লেখার নিয়ম?
টীকা আর প্যারাগ্রাফ মূলত অনেকটাই এক জিনিস। তাই আপনাকে চাকরি পরীক্ষায় যে বিষয়ে টীকা লিখতে বলবে সেই বিষয়টা নিয়ে একটি প্যারাগ্রাফ লিখে ফেলুন। তাছাড়া অনেকেই ভূমিকা দিয়ে টীকা লিখা শুরু করে থাকেন।
তারপরে মূল কথা এবং শেষে উপসংহার দিয়ে শেষ করেন। টীকাতে সাধারণত জিডিপি, জুলিওকুরি, চ্যাম্পিয়নস অব দ্যা আর্থ এই বিষয়ে লিখতে বলা হয়ে থাকে।
তাই আপনি এই বিষয়গুলোর সম্পর্কে যা জানেন তা প্যারাগ্রাফের মত করে লিখতে পারেন অথবা ভূমিকা দিয়ে শুরু করে উপসংহার দিয়ে শেষ করতে পারেন। অর্থাৎ আপনি এই বিষয়ে যতটুকু লিখতে পারবেন আপনি ততটুকুই লিখবেন।
টীকা কত শব্দের মধ্যে লেখা হবে এর কোন ধরা বাধা নিয়ম নাই তাই পরীক্ষার সময়ের উপর ভিত্তি করে আপনারা টীকা লিখতে পারেন। তাছাড়া যদি ধীরে ধীরে সুন্দরভাবে লিখতে পারেন তাহলে আরো ভালো হয়।
পাঠ টীকা লেখার নিয়ম?
পাঠ টীকা হলো কোনো কবিতা, গদ্য বা নাটকের নির্দিষ্ট অংশের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক ব্যাখ্যা, যা পাঠ্যাংশের ভাব ও রচয়িতার উদ্দেশ্য পাঠকের কাছে স্পষ্ট করে তোলে। এটি সাহিত্য বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
১. উদ্ধৃতাংশ (Text Quotation)
প্রথমেই যে অংশটির টীকা লেখা হবে, তা হুবহু উদ্ধৃত করতে হয়। এই অংশটি সাধারণত প্রশ্নে দেওয়া থাকে।
উদাহরণঃ
“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”
২. প্রসঙ্গ (Context)
এই অংশে ব্যাখ্যা করতে হয়। উদ্ধৃত অংশটি কোন রচনায় এসেছে, কে রচয়িতা, এবং কোন পরিস্থিতিতে এটি লেখা হয়েছে।
উদাহরণঃ
উক্ত পঙক্তি কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এই কবিতায় নারী-পুরুষের সমান ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরেছেন।
৩. ব্যাখ্যা (Explanation)
এখানে উদ্ধৃত অংশটি সহজ ভাষায় বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দিতে হয়। প্রতিটি শব্দ, বাক্য ও ভাবকে পাঠকের উপযোগীভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।
উদাহরণঃ
এই পঙক্তিতে কবি বলেছেন, পৃথিবীতে যে সব মহান ও কল্যাণকর সৃষ্টি হয়েছে, তার অর্ধেক কৃতিত্ব নারীর এবং অর্ধেক কৃতিত্ব পুরুষের। নারী-পুরুষ সমভাবে সভ্যতা নির্মাণে অবদান রেখেছে।
৪. ভাষা ও অলংকার বিশ্লেষণ (Language and Literary Devices)
এই অংশে কবির ভাষা ব্যবহার, অলংকার (যেমনঃ উপমা, রূপক), ছন্দ ও শৈলী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
উদাহরণঃ
এই পংক্তিতে ‘অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর এই বাক্যে সাম্যবাদী চেতনার প্রকাশ রয়েছে। ছন্দে প্রবাহময়তা আছে এবং এটি দ্বিপদী ছন্দে রচিত।
৫. বিষয়বস্তুর তাৎপর্য (Significance of the Passage)
এই অংশে ব্যাখ্যা করা হয় কেন এই উদ্ধৃতাংশ গুরুত্বপূর্ণ, কী বার্তা বা শিক্ষা এতে রয়েছে।
উদাহরণঃ
এই পংক্তি আমাদের সমাজে নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে। এটি নারী স্বাধীনতা ও সাম্যের শক্তিশালী ঘোষণা।
আরও পড়ুনঃ bangladeshi app প্রতিদিন 1000 টাকা ইনকাম পেমেন্ট বিকাশ
সংক্ষিপ্ত কাঠামো (Summary Format)
১. উদ্ধৃতাংশ
২. প্রসঙ্গ
৩. ব্যাখ্যা
৪. ভাষা ও অলংকার বিশ্লেষণ
৫. বিষয়বস্তুর তাৎপর্য
বিশেষ টিপসঃ
- ভাষা হতে হবে সহজ, স্পষ্ট ও প্রাঞ্জল।
- সাহিত্যিক শব্দচয়ন ও উপযুক্ত সাহিত্য-পরিভাষা ব্যবহার করুন।
- পংক্তির ভাব ও কবির উদ্দেশ্য ঠিকভাবে বোঝাতে হবে।
- নিজস্ব মত বা ব্যাখ্যা যোগ করলে নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
শেষ কথা
কাঙ্খিত বিষয় সম্পর্কে জানা থাকলে খুব সহজেই সাবলীলভাবে টীকা লেখা যায়। তাছাড়া কেউ যদি প্যারাগ্রাফ এর মতো করে টীকা লিখে থাকেন তাও কোন সমস্যা হবে না। পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে যদি বুঝে না থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।