ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম | ভাপা পিঠা বানাতে কি কি লাগে
শীতকালে অনেক স্থানে ভাপা পিঠা দেখতে পাওয়া যায়। ভাপা পিঠা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। এমন অনেকেই আছেন যারা বাইরে থেকে ভাপা পিঠা কিনে খেতে চান না। অর্থাৎ তারা বাড়িতে বসেই ভাপা পিঠা তৈরি করতে চান।তাদের জন্যই আজকে ভাপা পিঠা তৈরীর সহজ কিছু রেসিপি দেওয়া হবে যার মাধ্যমে ঘরে বসেই ভাপা পিঠা তৈরি করতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি করে যেতে দেওয়া যাক ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম সম্পর্কেঃ
ভাপা পিঠা বানাতে কি কি লাগে?
প্রথমে জানতে হবে ভাপা পিঠা বানাতে কি কি লাগে। দুই কাপ চালের গুড়া নিবেন, এক কাপ খেজুর গুড়া, এক কাপ নারিকেল গুড়া নিতে হবে, স্বাদমতো লবণ নিতে হবে, পিঠা বানানোর বাটি নিতে হবে,ও একটি পাতিল এর সাথে একটি ছিদ্রযুক্ত ঢাকনা থাকতে হবে।
সাধারণত এই উপকরনগুলো থাকলেই ভাপা পিঠা সুন্দরভাবে তৈরি করা যাবে। নিচে কিভাবে ভাপা পিঠা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে বলা হলো।
ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম পদ্ধতি ১
- প্রথমে অল্প হাঁড়িতে পানি নিতে হবে এবং তারপরে হাড়ির উপর ছিদ্রযুক্ত ঢাকনাটি রেখে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে।
- চুলাটি খুবই অল্প আচেঁ রাখতে হবে,ঢাকনার পাশে যদি ছিদ্র থেকে থাকে তাহলে তা মাটি অথবা আটার মাধ্যমে বন্ধ করে দিতে হবে।
- তারপরে ছোট বাটিতে মাখানো চালের গুড়া নিয়ে মাঝখানে পরিমানমতো মত গুড় দিতে হবে।
- গুড় দেওয়া হয়ে গেলে উপরে অল্প চালের গুড়া দিয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে বাটির মুখ ঢেকে ছিদ্রযুক্ত ঢাকনির উপর বাটি উল্টে তা সরিয়ে নিতে হবে।
- তারপরে দুই থেকে তিন মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তাহলেই সুস্বাদু ভাপা পিঠা তৈরি হয়ে যাবে।
- ভাপা পিঠা তৈরি হয়ে গেলে ভাপা পিঠার উপর নারিকেলের গুড়া দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে পরিবেশন করে খেতে পারেন।
ভাপা পিঠা বানানোর রেসিপি পদ্ধতি ২
ভাপা পিঠা তৈরি করার আরো একটি উপায় রয়েছে এবং এই উপায়টি খুবই সহজ। যদি কেউ ঘরে বসে ভাপা পিঠা তৈরি করতে চান তাহলে এই উপায়টি অবলম্বন করতে পারেন।
ভাপা পিঠা রেসিপি তৈরি করার উপকরণ?
চালের গুড়া লাগবে ১ কেজি, একটা নারিকেল লাগবে, গুড় লাগবে ২৫০ গ্রাম, লবণ ও পানি লাগবে পরিমাণমতো। তাছাড়া অন্যান্য উপকরণ গুলোর মধ্যে লাগবে দুই টুকরা সাদা নরম কাপড়ের টুকরা, ছোট ঢাকনা, পিঠা বানানোর জন্য ছোট গোল বাটি, ভাপা পিঠা তৈরি করার হাড়ি ও চাঁলনি।
ভাপা পিঠার তৈরীর পদ্ধতি?
ভাপা পিঠা কিভাবে তৈরি করতে হয় তা নিচে খুবই সুন্দর ভাবে পয়েন্ট আকারে দেখানো হলোঃ
১. প্রথমে একটি পাত্রে লবণ, চালের গুড়া ও অল্প অল্প পানি নিয়ে ঝরঝরে করে ভালোভাবে মাখতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন দলা শুকিয়ে না যায় এক্ষেত্রে দলা ঝরঝরে হতে হবে।
২. তারপরে এই চালের গুড়া চালনির মাধ্যমে হাত দিয়ে ঘষে ঘষে চালতে হবে। দেখবেন ঝরঝরে সুজির দানার মত বের হয়ে যাবে।
৩. এবার কোরানো নারিকেল অর্ধেকটা চেলে নেওয়া চালের গুড়ার সাথে মাখতে হবে। তারপরে হাড়ির অর্ধেকটা পানিতে ভরে জাল দিয়ে পানি ফুটে ভাব ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমান বাজারে আপনারা যদি খোঁজ করেন তাহলে ভাপা পিঠার জন্য বিশেষ এক ধরনের হাঁড়ি পেয়ে যাবেন।
সেটি ব্যবহার করলেই সব থেকে ভালো হবে। কেননা এই হাঁড়িটির ঢাকনা ঠিক মাঝখানে একটা ফুটো থাকবে যার মাধ্যমে হাঁড়ির কিনারায় বাতাস চলাচল আটকে দেওয়া হয় তাই ভাপটা ফুটো দিয়েই বের হয়ে যায়।
৪. তারপরে পিঠার জন্য ছোট বাটিতে এক ফোঁটা তেল মেখে কিছু মাখানো চালের গুড়া দিয়ে তার উপরে গুড় ছিটিয়ে ফেলতে হবে। এবার এর ওপরে আবার চালের গুড়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তারপরে আলতো আলতো হাতে চেপে সমান করে ভাপা পিঠার আকারে তৈরি করে নিতে হবে।
৫. তারপরে বাটিটা ভেজা পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে গরম পানির হাড়ির উপর উপর করে বসিয়ে দিতে হবে। এভাবে বাটিটা আস্তে আস্তে করে সরিয়ে নিতে হবে। তবে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন পিঠা কোনভাবেই ভেঙে না যায়।
৬. এবার কাপড়ের প্রান্ত গুলো মুড়ে এক জায়গায় করে বড় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এতে করে ভাপটা পিঠার গায়ে লাগবে।
৫ থেকে ৭ মিনিট মতো সিদ্ধ হলে ঢাকনা সরিয়ে আঙ্গুল দিয়ে চেপে দেখতে হবে নরম হয়েছে কিনা। নরম হলে বুঝে নিতে হবে যে আপনার ভাপা পিঠাটি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
শেষ কথা
আশা করি পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম বা কিভাবে ঘরে বসেই ভাপা পিঠা বাড়ানো যায় এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন। তাই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো সরবরাহ করে সহজ পদ্ধতিতেই ভাপা পিঠা তৈরি করে ফেলুন। ধন্যবাদ।