কয়েন দিয়ে টাকা ইনকাম
বর্তমান যুগে ডিজিটাল প্রযুক্তির উত্থানে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা কয়েনের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েনসহ অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রা বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন এক সুযোগের সৃষ্টি করেছে।
এই মুদ্রাগুলো কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা সরকারী প্রতিষ্ঠানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায়, তা অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি শুধু একটি বিনিয়োগের মাধ্যম নয়। এটি এমন একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে যার মাধ্যমে অনলাইনে আয় করা সম্ভব।কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতিগুলো ব্যাপক এবং বৈচিত্র্যময়। মাইনিং, ট্রেডিং, স্টেকিং, NFT ক্রিয়েশন, এবং ডি-ফাই (DeFi) প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
তবে এর সঠিক ব্যবহার এবং আয় করতে হলে, ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার অস্থির এবং এতে প্রতারণা বা স্ক্যাম এর সম্ভাবনাও থাকে, তাই এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার আগে ভালোভাবে গবেষণা করা প্রয়োজন।
এখানে আমরা কয়েন দিয়ে আয় করার বিভিন্ন উপায় এবং এর সাথে সম্পর্কিত সতর্কতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কয়েন দিয়ে টাকা ইনকাম?
কয়েন দিয়ে টাকা ইনকাম করার কিছু উপায় রয়েছে। তবে এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ। নিচে কয়েন দিয়ে টাকা ইনকাম করা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং একটি জনপ্রিয় উপায় যার মাধ্যমে আপনি বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন বা অন্যান্য কয়েন কিনে ও বিক্রি করে লাভ করতে পারেন।
বাজারের ওঠাপড়ার উপর ভিত্তি করে আপনি দ্রুত লাভ করতে পারবেন। তবে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই শুরু করার আগে ভালোভাবে গবেষণা করা প্রয়োজন।
২. ক্রিপ্টো মাইনিং
ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি কম্পিউটার বা বিশেষ হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে নতুন কয়েন উৎপাদন করতে পারেন।
বিটকয়েন মাইনিং সবচেয়ে পরিচিত, তবে অন্যান্য কয়েনও মাইন করা যায়। মাইনিংয়ে ইলেকট্রিসিটি এবং হার্ডওয়্যারের খরচ হতে পারে, তবে সঠিক কৌশল ব্যবহার করলে এটি লাভজনক হতে পারে।
৩. ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টেকিং
ক্রিপ্টো স্টেকিং একটি প্রক্রিয়া যেখানে আপনি আপনার কয়েন একটি নির্দিষ্ট ওয়ালেটে রেখে দেন এবং তার বিনিময়ে আপনি পারিশ্রমিক হিসেবে আরও কয়েন উপার্জন করেন।
এই প্রক্রিয়া সাধারণত Proof of Stake (PoS) ভিত্তিক ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে কাজ করে, যেমনঃ Ethereum 2.0।
৪. ক্রিপ্টো ফসকিং
কিছু বিশেষ ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে যেগুলি ফসকিং (airdrop) এর মাধ্যমে বিনামূল্যে দেয়া হয়। এই কয়েনগুলো যদি দীর্ঘমেয়াদে বৃদ্ধি পায়, তবে তা আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে।
৫. NFT (Non-Fungible Token) বিক্রি
আপনি যদি ডিজিটাল আর্ট বা কনটেন্ট তৈরি করেন, তবে আপনি সেই কনটেন্টকে NFT হিসেবে বিক্রি করতে পারেন। NFT বিক্রির মাধ্যমে আপনার কয়েন আয়ের একটি সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
৬. ক্রিপ্টো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অনেক ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ও প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনি তাদের সেবা বা পণ্য প্রচার করে আর্নিং করতে পারেন। যখন কেউ আপনার রেফারেল লিংক ব্যবহার করে সাইন আপ করে বা ট্রেড করে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
৭. ক্রিপ্টোকারেন্সি লোন বা ইন্টারেস্ট আর্নিং
ক্রিপ্টো লোন প্ল্যাটফর্মে আপনার কয়েন জমা রেখে আপনি ইন্টারেস্ট বা মুনাফা উপার্জন করতে পারেন। এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে, আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি ঋণ হিসেবে দিতে পারেন এবং তার বিনিময়ে আপনি নিয়মিত আয়ের জন্য ইন্টারেস্ট পাবেন।
উদাহরণঃ BlockFi, Celsius Network, Nexo
৮. ক্রিপ্টোকারেন্সি পোর্টফোলিও পরিচালনা
আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং বা ইনভেস্টমেন্টে দক্ষ হন, তাহলে আপনি অন্যদের জন্য পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট সেবা দিতে পারেন।
আপনি নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে অন্যদের বিনিয়োগ পরিচালনা করতে পারবেন এবং এর জন্য ফি বা কমিশন নিতে পারবেন।
উদাহরণঃ eToro, Coinbase Pro
আরও পড়ুনঃ কোন অ্যাপ রিয়েল টাকা দেয়
৯. ক্রিপ্টো বাজি বা ডেরিভেটিভ ট্রেডিং
ক্রিপ্টোকারেন্সির ডেরিভেটিভ বা ফিউচার ট্রেডিং মাধ্যমে আপনি মূল ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম ওঠানামার উপর ভিত্তি করে লাভ করতে পারেন। এতে আপনি দাম বাড়লে বা কমলে লাভ অর্জন করতে পারবেন। তবে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই সাবধানে ট্রেড করা উচিত।
উদাহরণঃ Binance Futures, BitMEX, Bybit
১০. ক্রিপ্টো শেয়ার প্ল্যান (Yield Farming)
এটি একটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল যেখানে আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করে বা স্টেকিং প্ল্যাটফর্মে রাখতে পারেন এবং সেখানে থেকে মুনাফা অর্জন করতে পারেন। বিশেষত DeFi (Decentralized Finance) প্ল্যাটফর্মগুলোতে yield farming প্রচলিত।
উদাহরণঃ Uniswap, Aave, Compound Finance
১১. ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যারোব্লক (Airdrop)
অনেক নতুন ক্রিপ্টো প্রজেক্ট তাদের টোকেন বা কয়েন বিনামূল্যে বিতরণ করে (এয়ারড্রপ)। আপনি যদি সেই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হন বা নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করেন, তবে আপনি বিনামূল্যে কয়েন পাবেন। পরবর্তীতে, এগুলো বিক্রি করে আয় করা যেতে পারে।
উদাহরণঃ CoinMarketCap Airdrops, Binance Airdrop
১২. ক্রিপ্টোকারেন্সি ফান্ডিং
আপনি যদি নতুন ক্রিপ্টো প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন, তবে ICO (Initial Coin Offering) বা IEO (Initial Exchange Offering) এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের কয়েন কিনে পরবর্তীতে এগুলির দাম বাড়লে তা বিক্রি করে লাভ করতে পারেন।
উদাহরণঃ Polkadot, Filecoin, Binance Launchpad
১৩. ক্রিপ্টো রিভারেল সার্ভিস
এটি একটি নতুন কৌশল যেখানে আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্মের জন্য আপনার ওয়েবসাইটে বা ব্লগে রিভিউ লিখে কমিশন উপার্জন করতে পারেন। এছাড়া আপনি রেফারেল লিংক শেয়ার করেও কমিশন লাভ করতে পারেন।
উদাহরণঃ Binance, Coinbase, Kraken
১৪. ক্রিপ্টো ফান্ড ম্যানেজমেন্ট
যদি আপনার ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ে অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনি অন্যদের জন্য ক্রিপ্টো ফান্ড ম্যানেজমেন্ট সেবা প্রদান করতে পারেন। এটি একটি পেশাদারী সেবা হতে পারে যেখানে আপনি অন্যদের ইনভেস্টমেন্ট পরিচালনা করবেন এবং তার জন্য ফি নিতে পারেন।
১৫. ক্রিপ্টো চ্যারিটি (Charity Donations)
আপনি যদি সমাজসেবী হয়ে থাকেন, তাহলে বিভিন্ন ক্রিপ্টো চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানে কয়েন দান করে আয় করতে পারেন। কিছু প্ল্যাটফর্ম আপনাকে আয় করার সুযোগ দেয় যদি আপনি তাদের নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করেন এবং কন্ট্রিবিউট করেন।
১৬. ক্রিপ্টো কারেন্সি ক্যাশব্যাক ও রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম
অনেক ক্রিপ্টো কারেন্সি ওয়ালেট এবং এক্সচেঞ্জ বিভিন্ন ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম অফার করে, যেখানে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে কেনাকাটা করার পর ফেরত কিছু পরিমাণ কয়েন পেতে পারেন।
উদাহরণঃ Lolli, Pei, Fold app (যেখানে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে শপিং করলে রিওয়ার্ড পাবেন)
১৭. ব্লকচেইন গেমিং
ব্লকচেইন গেমগুলো এখন ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব গেমে আপনি প্লে করে ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করতে পারেন। গেমের মধ্যে আপনি এনএফটি (NFT) সংগ্রহ করে, বিক্রি করে বা ট্রেড করে আয় করতে পারবেন।
উদাহরণঃ Axie Infinity, Decentraland, The Sandbox
১৮. ক্রিপ্টো কারেন্সি কোচিং
যদি আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে দক্ষ হন, তাহলে আপনি অনলাইনে কোচিং প্রদান করে আয় করতে পারেন। অনেক ব্যক্তি ক্রিপ্টো বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী, এবং আপনি একে একটি পেশা হিসেবে নিতে পারেন।
উদাহরণঃ Udemy, Teachable, Skillshare
১৯. ক্রিপ্টো ক্যাপিটাল রাইজিং (Capital Raising)
বিভিন্ন নতুন ক্রিপ্টো প্রকল্প বা স্টার্টআপের জন্য ফান্ড সংগ্রহ (Fundraising) করতে পারেন। আপনি যদি ভালো বিনিয়োগকারী বা ব্যবসায়িক দৃষ্টি শক্তি রাখতে পারেন, তাহলে প্রাথমিক স্তরে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং পরবর্তীতে সেগুলি বিক্রি করে লাভ উপার্জন করতে পারেন।
উদাহরণঃ Initial Coin Offering (ICO), Security Token Offering (STO)
২০. ক্রিপ্টো ডোনেশন (Charity Donations)
অনেক ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়ালেট চ্যারিটিতে দান গ্রহণ করতে পারে। যদি আপনি কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হয়ে থাকেন, যিনি সমাজসেবা করতে চান, তাহলে আপনি আপনার কয়েন দান করে একটি উপকারি উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেন এবং কিছু আয়ও করতে পারেন।
২১. ক্রিপ্টো রেটেইল প্ল্যাটফর্মে বিক্রি
আপনি যদি ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করেন, তবে কিছু রেটেইল প্ল্যাটফর্মে ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে পেমেন্ট গ্রহণ করে আয় করতে পারেন। ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণের মাধ্যমে আপনি গতি পেতে পারেন এবং নতুন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারেন।
উদাহরণঃ Overstock, Newegg, Shopify
২২. ক্রিপ্টো-ভিত্তিক লোন প্রদান
ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে আপনি ঋণ প্রদান করে আয় করতে পারেন। আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি ঋণ হিসেবে দিতে পারেন এবং তার উপর সুদ লাভ করতে পারেন।
এটা একটি নতুন ধরনের অর্থনৈতিক সিস্টেম, যেখানে আপনি নিজেকে একটি লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থাপন করতে পারেন।
উদাহরণঃ BlockFi, Nexo, Compound Finance
আরও পড়ুনঃ ডিপোজিট ছাড়া ইনকাম সাইট
২৩. ফ্রি ক্রিপ্টো (Free Crypto)
অনেক ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যেখানে আপনি বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করে বা নির্দিষ্ট কিছু কাজ করলেই ফ্রি ক্রিপ্টোকারেন্সি পেতে পারেন। যেমনঃ ওয়েবসাইট ভিজিট, সার্ভে পূরণ বা অ্যাপ ডাউনলোড করে আপনি কয়েন উপার্জন করতে পারেন।
উদাহরণঃ Coinbase Earn, FreeBitcoin, Cointiply
২৪. ক্রিপ্টো ওয়ালেট অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ক্রিপ্টো ওয়ালেট সার্ভিসগুলো বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে, যেখানে আপনি তাদের সেবা প্রোমোট করে কমিশন উপার্জন করতে পারেন।
এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ, ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করতে পারেন।
উদাহরণঃ Exodus Wallet, Trust Wallet, Ledger
২৫. ক্রিপ্টো ফাউন্ডেশন বা প্রজেক্টের সঙ্গে কাজ
ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত প্রজেক্ট, প্ল্যাটফর্ম বা ফাউন্ডেশনে কাজ করতে পারেন। অনেক নতুন প্রকল্প নিজেদের উন্নতির জন্য লেখক, ডেভেলপার, মার্কেটিং এক্সপার্ট বা রিসার্চার নিয়োগ করে, যারা ক্রিপ্টো বা ব্লকচেইন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করবে।
উদাহরণঃ Ethereum Foundation, Chainlink Labs, ConsenSys
২৬. ক্রিপ্টো টিউটোরিয়াল বা ব্লগ লেখা
আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ব্লকচেইন প্রযুক্তির উপর দক্ষ হন, তবে আপনি টিউটোরিয়াল বা ব্লগ লিখে আয় করতে পারেন।
অনেক ওয়েবসাইট বা মিডিয়া আউটলেট আছে যারা গেস্ট পোস্ট বা ব্লগের জন্য অর্থ প্রদান করে। আপনি আপনার জ্ঞান শেয়ার করে টাকা উপার্জন করতে পারেন।
উদাহরণঃ Medium Partner Program, Steemit, Publish0x
২৭. ক্রিপ্টো বেটিং বা গেমিং
বিভিন্ন ক্রিপ্টো-ভিত্তিক গেম এবং বেটিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনি কয়েন দিয়ে বাজি ধরতে পারেন বা গেম খেলতে পারেন এবং তা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে, এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করার আগে ভালভাবে ঝুঁকি বিচার করা প্রয়োজন।
উদাহরণঃ WinMoney, Stake.com, TrustDice
২৮. ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রিয়েট
আপনি নিজেই একটি নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি বা টোকেন তৈরি করে তা প্রচার করতে পারেন। যদি আপনার নতুন ক্রিপ্টো প্রকল্প মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়, তবে আপনি টোকেনের মাধ্যমে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এটি শুরু করতে প্রয়োজন হবে কিছু প্রযুক্তিগত দক্ষতা বা ভালো একটি দল।
উদাহরণঃ Tokenomy, Ethereum Platform
২৯. ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও ট্র্যাকিং সেবা প্রদান
আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ হন, তবে আপনি ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও ট্র্যাকিং সেবা প্রদান করতে পারেন। অনেক বিনিয়োগকারী তাদের পোর্টফোলিও ট্র্যাক করতে চান এবং আপনি তাদের সেবা দিয়ে উপার্জন করতে পারেন।
উদাহরণঃ Delta, Blockfolio, CoinTracker
৩০. ক্রিপ্টো কারেন্সি পেমেন্ট সিস্টেমে কাজ করা
বিশ্বজুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি পেমেন্ট সিস্টেম আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আপনি যদি ক্রিপ্টো পেমেন্ট গেটওয়ে বা সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হন, তাহলে সেখানে কাজ করে আয় করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ক্রিপ্টো পেমেন্ট গেটওয়ে বা ক্রিপ্টো পেমেন্ট প্রসেসিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
উদাহরণঃ CoinPayments, BitPay, CoinGate
৩১. ক্রিপ্টোকারেন্সি ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
আপনি যদি সফটওয়্যার ডেভেলপার হন, তাহলে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি ফান্ড ম্যানেজমেন্টের জন্য অ্যাপ্লিকেশন বা টুল ডেভেলপ করতে পারেন।
এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ট্রেডিং, পোর্টফোলিও ট্র্যাকিং, স্টেকিং, ইত্যাদি সেবা প্রদান করতে পারে এবং এটি থেকে আয় করা সম্ভব।
উদাহরণঃ Mycelium, Trust Wallet, Coinomi
৩২. ক্রিপ্টোকারেন্সি পার্টনারশিপ বা কোলাবোরেশন
আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টো প্রকল্পের সাথে পার্টনারশিপ বা কোলাবোরেশন করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার একটি ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে, তবে আপনি একটি ক্রিপ্টো কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপ করে তাদের সেবা প্রচার করতে পারেন এবং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
উদাহরণঃ Binance Affiliate, Crypto.com Affiliate Program
৩৩. ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেনিং এবং সেমিনার আয়োজন
ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি যদি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন, তবে আপনি অনলাইন বা অফলাইনে ট্রেনিং সেশন, সেমিনার বা ওয়েবিনার আয়োজন করতে পারেন এবং টিকেট বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
উদাহরণঃ Udemy, Coursera, Teachable
৩৪. ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন বা ডেক্স (DEX) প্ল্যাটফর্ম ডেভেলপ করতে পারেন, যা আপনাকে বিভিন্ন ফিচার যেমনঃ ওয়ালেট সেবা, ট্রেডিং সিস্টেম, স্টেকিং, ইত্যাদি প্রদান করতে সহায়তা করবে।
উদাহরণঃ Uniswap, PancakeSwap, MetaMask
৩৫. ক্রিপ্টো ব্যবসা শুরু করা
আপনি যদি ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি দেখতে চান, তাহলে আপনি একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ, ওয়ালেট সেবা বা আইসিও (Initial Coin Offering) প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটি একটি বড় প্রকল্প, তবে উপার্জনের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
উদাহরণঃ Binance, Kraken, Coinbase
আরও পড়ুনঃ কোন গেম খেলে টাকা ইনকাম করা যায়
৩৬. ক্রিপ্টো-ভিত্তিক পিপল-টু-পিপল (P2P) লেনদেন
ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের জন্য আপনি পিপল-টু-পিপল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন, যেখানে আপনি অন্যান্য মানুষের সঙ্গে সরাসরি ক্রিপ্টো কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন এবং মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
উদাহরণঃ Paxful, LocalBitcoins, Remitano
বিঃদ্রঃ
ক্রিপ্টোকারেন্সি বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অবৈধ তাই এর থেকে সবাই দূরে থাকবেন। এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ধারণা নেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
শেষ কথা
ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি নতুন এবং উদীয়মান প্রযুক্তি, যা সারা বিশ্বে একযোগে জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে, বাংলাদেশের মতো দেশে এর ব্যবহার আইনি ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন, এবং এর অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে।