স্বাস্থ্য

আমের আচার তৈরি করার পদ্ধতি

আম খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক হয়তো খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ আম হচ্ছে আমাদের খুবই পছন্দের একটি ফল। কাঁচা আম থেকে শুরু করে পাকা আম খেতে আমাদের খুবই ভালো লাগে। কাঁচা আম দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে অনেক ধরনের রেসিপি।আমের আচার তৈরি করার পদ্ধতিকাঁচা আম দিয়ে তৈরি করা রেসিপিগুলোর মধ্যে আমের আচার রেসিপি অন্যতম। অর্থাৎ কাঁচা আম দিয়ে আপনারা ঘরে বসেই আমের আচার তৈরি করে ফেলতে পারেন। টক ঝাল মিষ্টি আমের আচার বোতলে সংরক্ষণ করে দীর্ঘদিন খাওয়া সম্ভব।

আজকের পোস্টে আমের আচার তৈরি করার পদ্ধতি বা আমের আচারের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

আমের আচার তৈরি করার রেসিপি?

কাঁচা আম দিয়ে অনেক ধরনের রেসিপি তৈরি করা সম্ভব। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে অনেকেই কাঁচা আম দিয়ে টক ঝাল মিষ্টি আমের আচার বানিয়ে থাকেন। আর এই আমের আচার তারা বোতলে সংরক্ষণ করে রাখেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে অবসর সময়ে খান।

আজকে আমি আপনাদেরকে আমের আচার তৈরি করার দুইটি রেসিপির কথা বলবো। অর্থাৎ এই দুইটি রেসিপি অনুযায়ী আপনারা টক ঝাল মিষ্টি আমের আচার বাড়িতে বসে তৈরি করে নিতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ দাবা খেলে টাকা ইনকাম

আমের আচার তৈরি করার পদ্ধতি?

আম খেতে যারা পছন্দ করে থাকেন তারা কাঁচা আমের এই আচারটি তৈরি করতে পারেন। নিচে কিভাবে আমের আচার তৈরি করবেন সেই প্রক্রিয়া দেওয়া হলোঃ

আমের আচার তৈরির রেসিপি ১

১. প্রথমে আপনাদেরকে কাঁচা আম সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে হবে। কাঁচা আম সংগ্রহ করা হয়ে গেলে একটি পাত্রে সেগুলো ছোট ছোট করে কেটে রাখতে হবে। কাটা হয়ে গেলে আমগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে এবং তারপর তাতে এক চামচ নুন ছিটিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। এবার আপনাদেরকে অন্তত তিন ঘন্টা এইভাবে রেখে দিতে হবে।

২. আপনি যখন নুন ছিটিয়ে আমের আচার তিন ঘণ্টায় রেখে দিবেন তারপর দেখবেন জল বেরিয়েছে। এই জল গুলো আমের উপর থেকে থেকে ফেলে দিতে হবে।

৩. এবার আপনাদেরকে গোটা সরষে, মৌরি, মেথি জিরে, সবকিছু একসাথে নিয়ে ভালো করে বেটে নিতে হবে। মসলা ভালোভাবে বাটা হয়ে গেলে এবার এই মসলাগুলি আলাদা করে রাখুন।

৪. এবার আপনাদেরকে একটি কাছের পাত্রে আমের টুকরাগুলি নিতে হবে। কাচের পাত্রটির মুখ বন্ধ হলে সব থেকে ভালো হয়। এবার সেই পাত্রে বেটে রাখা মসলা রসুন বাটা, আদা বাটা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, অল্প চিনি নুন এবং সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে বা মিশিয়ে নিন।

ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে কাছের জারের মধ্যে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। কাচের জারটি একটানা সাত দিন রোদে রেখে দিতে হবে।

৫. সাত দিন পর দেখবেন আপনার আমের আচারটি একদম তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই সাত দিনের মধ্যে অবশ্যই একবার করে নেড়েচেড়ে দিবেন আপনার আমের আচার গুলো। আচার তৈরি হয়ে গেলে আচার ঠান্ডা জায়গায় রেখে দিন। তাহলে আপনারা অনেকদিন এই আচারটি খেতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ অংক করে টাকা ইনকাম

আমের আচার তৈরির রেসিপি ২

যারা আমের আচার খেতে পছন্দ করে থাকেন তারা আমের আচার দিয়ে এই রেসিপিটি তৈরি করতে পারেন। এই রেসিপিটি তৈরি করার জন্য কোন কোন উপকরণ লাগবে তা নিচে দেওয়া হলোঃ

আমের আচার বানাতে কি কি লাগে?

১ কেজি কাঁচা আম এবং আধা কাপ সরিষার তেল। এক কাপ রসুন বাটা এবং দুই চা চামচ আদা বাটা।দুই চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং ২ চা চামচ চিনি।নুন নিতে হবে পরিমাণ মতো এবং মেথি গুঁড়া লাগবে এক চা চামচ।

তাছাড়া এর সাথে ২ চা চামচ কালোজিরা এবং এক চা চামচ মৌরি গুড়া লাগবে। এর সাথে দিবেন ২ চা চামচ রাঁধুনি গোড়া এবং তিন চা চামচ সরিষা বাটা। দুই টেবিল চামচ লঙ্কাগুড়া এবং এক চা চামচ কালোজিরা গুড়া লাগবে।

আমের আচার যেভাবে তৈরি করবেন?

প্রথমে খোসা সহ আম টুকরা টুকরা করে নিয়ে তাতে নুন মাখিয়ে একটি পাত্রে সারারাত রেখে দিতে হবে। পরের দিন আম ধুয়ে নিয়ে আদা, হলুদ এবং রসুন মাখিয়ে রোদে রেখে দিতে হবে কিছুক্ষণ।

তারপরে কড়াইতে তেল দিতে হবে এবং সেখানে আমি টুকরাগুলো দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে হবে। আমের টুকরা গলে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে। অন্য একটি কড়াইয়ে বাকি তেল দিয়ে চিনি গলিয়ে নিতে হবে।

এরপর মেথি আর মৌরি ছাড়া বাকি যেই সকল উপকরণগুলো রয়েছে সবকিছু দিয়ে আম কষিয়ে নিতে হবে।আম গলে যেতে থাকলে মৌরি এবং মেথি গুঁড়ো দিয়ে আম নামিয়ে নিতে হবে। এবার এটি ভালো এবং পরিষ্কার বোতলে সংরক্ষণ করে রেখে দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম সাইট নগদ পেমেন্ট

আমের আচারের উপকারিতা?

আম খাওয়ার যেমন অসাধারণ কিছু উপকারিতা রয়েছে তেমনি আমের আচার খেলেও আমাদের শরীরের নানান উপকার সাধন হয়ে থাকে। নিয়মিত আচার খেলে আমাদের শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় থাকে। তাছাড়া আমের আচার খাওয়ার আরো কিছু উপকারিতা রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে থাকে

যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্য আমের আচার খুবই কার্যকরী। আচারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালারি কম পরিমাণে থাকে। যার কারণে এটা হজম খুব দ্রুত হয়ে থাকে। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া আমের আচার রক্তে HbA1c-এর মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করে থাকে।

২. ওজন কমাতে সাহায্য করে

আমের আচারে মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি যা সাধারণত ভ্যাটকে খুব সহজেই ভেঙে দিতে পারে।তাই যাদের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সমস্যায় আছেন তারা চাইলে ভাত, পরোটা বা রুটির সাথে নিয়মিত আসা খাওয়া অভ্যাস করতে পারেন।

৩. গর্ভাবস্থায় আমের আচার

প্রেগনেন্সিতে অনেকেই মর্নিং সিকনেস সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাদের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে আমের আচার। তাছাড়া নিয়মিত আচার খেলে আমাদের খিদে বেড়ে থাকে এবং আমাদের শরীরে হরমোনের উদ্দীপনা বেড়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ লোগো ডিজাইন করে আয়

৪. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে

নিয়মিত আচার খাওয়ার ফলে আমাদের হজম শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। বিশেষ করে আমের আচারে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধনের পাশাপাশি হজমের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত আচার খাওয়ার অভ্যাস শুরু করতে পারেন।

শেষ কথা

আমের আচার সকলের পছন্দের একটি খাবার। আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা আমের আচার রেসিপি বা কিভাবে বাড়িতে বসেই আমের আচার তৈরি করা যায় এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন। আর যদি কোন বিষয় না জেনে থাকেন তাহলে সরাসরি কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

A Friendly Request: Please Consider Disabling Your Ad Blocker