অনলাইন ইনকাম

রাইড শেয়ার করে ইনকাম

বর্তমান সময়ে টাকা ইনকাম করার অনেক উপায়ের মধ্যে একটি উপায় হচ্ছে রাইড শেয়ারিং। এটি টাকা ইনকাম করার অন্যতম সহজ একটি উপায়। আপনার কাছে যদি কোন মোটরবাইক বা কোন গাড়ি থাকে।রাইড শেয়ার করে ইনকামতবে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং করে ভাল পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের রাইড শেয়ারিং কি, রাইড শেয়ারিং কিভাবে কাজ করে। এগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য বিস্তারিত জানাবো।

রাইড শেয়ারিং কি?

রাইড শেয়ারিং হল এমন একটি ধারণা বা বিষয় যেখানে একজন মানুষ অন্য মানুষদের সাথে তার নিজস্ব যানবাহন শেয়ার করে অর্থাৎ তার যানবাহন অন্যদের যাতায়াত এর জন্য শেয়ার করে থাকে।

আর এর বিনিময়ে কিছু টাকা উপার্জন করে এভাবেই মূলত রাইড শেয়ারিং করা হয়। রাইড শেয়ারিং সার্ভিসসমুহের ধারণা প্রায় অনেকটাই চিরাচরিত গাড়ি ভাড়ার প্রক্রিয়ার মতো একই ধরণের।

পার্থক্য শুধুমাত্র রাইড শেয়ারিং অ্যাপসমুহের ক্ষেত্রে গাড়ি ভাড়া করা হয় স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে। আর এখানে আলাদা দামাদামির কিছু নেই।

রাইড শেয়ারিং থেকে আয় করার উপায়?

বর্তমান সময়ে সাশ্রয়ের সঙ্গে নিরাপদে যাতায়াত করার সুবিধার কারণে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাইড শেয়ারিং ব্যবস্থায় কিছু ছোট ছোট ধাপ অতিক্রম করার মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক যেমনঃ

সর্বপ্রথম আপনার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য বা কিছু ডকুমেন্টস দিয়ে আপনাকে যেকোন রাইড শেয়ারিং প্লাটফর্মে যুক্ত হতে হবে। হতে পারে এটা কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা রাইড শেয়ারিং অ্যাপ এর মাধ্যমে।

প্লাটফর্মে যখন আপনি রাইডার হিসেবে যুক্ত হবেন তখন থেকেই কেবলমাত্র আপনি রাইড রিকোয়েস্ট পাবেন এবং রাইড শেয়ারিং করতে পারবেন।

এখন আমরা জানবো রাইড শেয়ারিং এর ৪টি ধাপ সমূহ?

১ম ধাপঃ

প্রথমত,একজন যাত্রী নিকটস্থ কোন রাইডারকে রিকোয়েস্ট পাঠান। এবং রাইড শেয়ারিং অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকে।

২য় ধাপঃ

এই রিকোয়েস্ট রাইড শেয়ারিং অ্যাপ এর মাধ্যমে নিকটবর্তী রাইডারের কাছে পৌঁছে যায়।

৩য় ধাপঃ

যদি ঐ রিকোয়েস্ট রাইডার গ্রহণ করেন তাহলে তখন তিনি ঐ যাত্রীকে উল্লেখ করা স্থান থেকে যানবাহনে তোলেন।

৪র্থ ধাপঃ

যখন যাত্রীকে গন্তব্যে পৌছেঁ দেওয়া হয় তখন ঐ যাত্রী হ্যান্ড ক্যাশ, মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের দ্বারা বিল পে করে দেন। আর এভাবেই এখন রাইডার তার রাইড শেয়ার করার বিনিময়ে আয় করতে সক্ষম হয়ে থাকে।

যাত্রী এবং রাইডার প্রত্যেকেই একে অপরকে অ্যাপের মাধ্যমে তারা তাদের অভিজ্ঞতা ও ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে রিভিউ দিতে পারেন। যা একজন অপরিচিত মানুষের সাথে রাইড শেয়ার করার ক্ষেত্রে অতান্ত প্রায়জনীয়।

রাইডারদের ক্ষেত্রেও এই রেটিং বেশ কার্যকর ভূমিকা থাকে। কারণ এই রিভিউয়ের জন্য তিনি পরবর্তীতে বেশি যাত্রী কিংবা কোম্পানি থেকে বোনাস এবং পুরষ্কারও পেতে পারেন।

জেনে রাখা ভাল যে, বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং প্লাটফর্ম গুলো রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলো রাইডার এবং যাত্রী উভয়ের ফোনের জিপিএস সেবার উপর নির্ভর করে কাজ করে থাকে।

রাইড শেয়ার করে ইনকাম?

১. পাঠাও (Pathao)

২০১৬ সালে প্রথম রাইড শেয়ারিং কোম্পানি হিসেবে পাঠাও বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। সারাদেশে তাদের রয়েছে প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক, এবং তাদের রয়েছে তিন লাখেরও অধিক রাইডার।

২. ওভাই (Obhai)

ওভাই হচ্ছে বাংলাদেশী রাইড শেয়ারিং একটি সার্ভিস। এই প্লাটফর্মটির শুধু সেবা পাওয়া যায় ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার এর মত শহরগুলোতে।

৩. উবার (Uber)

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক খ্যাতি পাওয়া রাইড শেয়ারিং কোম্পানি হচ্ছে উবার। বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং প্লাটফর্ম মধ্যে এটি একটি। এটিও ২০১৬ সালে তাদের প্রথম যাত্রা এই দেশে শুরু করেছিল। এছাড়াও আরও বেশকিছু রাইড শেয়ারিং প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমনঃ

  • আমার বাইক
  • যাবো
  • সহজ
  • চলো
  • ডিজিটাল রাইড
  • পিকমি
  • গতি
  • টেক্সিওয়ালা ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে এখন পর্যন্ত পনেরো টি কোম্পানি নিবন্ধিত রয়েছে। নারীদের কথা মাথায় রেখে নারীদের আলাদা সুরক্ষা প্রদানে চালু হয়েছে কিছু মহিলা দ্বারা চালি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। স্যাম, পিংক লিলি বা ওবোন এর মত এসব সেবাও অনেকে নিয়মিত ব্যবহার করে থাকে।

মোট কথা হচ্ছে দেশের রাইড শেয়ারিং সেবা এখন অনেক সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দেশের রাইড শেয়ারিংয়ের অধিকাংশ পাঠাও এবং উবারের দখলে রয়েছে, দেশের নাগরিকরা এই দুইটি রাইড শেয়ারিং ব্যবহার করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ ক্যাপচা টাইপিং কাজ দৈনিক পেমেন্ট

রাইড শেয়ারিং থেকে আয় করতে যা যা প্রয়োজন?

রাইড শেয়ারিং থেকে আয় করতে হলে অবশ্যই একটি স্মার্টফোন থাকা আবশ্যক। এছাড়াও ন্যাশনাল আইডি কার্ড কিংবা পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক। কার ও বাইকের মাধ্যমে আয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাইক ও কারের ড্রাইভিং লাইসেন্স একই সঙ্গে যথাযথ ডকুমেন্ট থাকা একান্ত আবশ্যক।

প্যাসেঞ্জার থেকে পাওয়া ভাড়ার ১০% থেকে ১৫% রাইডিং প্লাটফর্ম সার্ভিস চার্জ হিসেবে গ্রহণ করে এবং অবশিষ্ট টাকা রাইডারের কাছে থাকে।

নিরাপত্তার জন্য রাইডারদের যে বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত?

১. প্রথমে যাত্রীকে যাচাই করা

রাইড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করার পর এবং আপনার যাত্রা শুরুর আগে যাত্রীরা যেমন গাড়ির লাইসেন্স প্লেট, আপনার ছবি ইত্যাদি অ্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে নেয়।

ঠিক তেমনি আপনিও তাদের নাম, ছবি ইত্যাদি মিলিয়ে নিবেন। এছাড়া অবশ্যই ট্রিপের অনুরোধ গ্রহণ করার আগে যাত্রীর রেটিং দেখে নিবেন।

আরও পড়ুনঃ ক্যাসিনো গেম অনলাইন টাকা ইনকাম

২. সিট বেল্ট ব্যবহার করা

গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার হচ্ছে সিট বেল্ট এর ব্যবহার। তাই নিজে সিট বেল্ট পরুন এবং যাত্রীদেরও সিট বেল্ট পরতে উৎসাহিত করুন।

বর্তমান সিডিসির তথ্য মতে, সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে জীবন বাঁচানো এবং আহত হওয়ার হার কমাতে এটি সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

৩. সতর্কতা অবলম্বন করা

রাইড শুরু করার পর নিজেকে এবং আপনার যাত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকুন। সবসময় রাস্তার দিকে চোখ রাখুন একই সঙ্গে গাড়ি চালানোর সময় ফোনে মেসেজিং কিংবা কল করা থেকে বিরত থাকুন। আর অবশ্যই গাড়ি চালানোর সময় ঝিমানো এড়াতে প্রয়োজনমতো বিশ্রাম নিন।

৪.রেটিং দেওয়া

যাত্রা শেষ হওয়ার পর অ্যাপে যাত্রী সম্বন্ধে রেটিং এবং মতামত জানানোর সুযোগ রয়েছে, এই সুযোগ গ্রহণ করুন।

শেষ কথা

আজকাল রাইড শেয়ারিং অ্যাপের কদর এতটাই বেড়েছে যে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যাই হোক ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ বাজারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সফলতার সঙ্গে।

আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনিও আয় করে নিতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় জানা অজানা তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button