সরকারি ইনকাম সাইট
অনলাইন ইনকাম হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনার হাতে থাকা মোবাইলফোন দিয়ে টাকা আয় করা। অনলাইনে বিভিন্নভাবে টাকা আয় করা যায়, তার মধ্যে ছোটখাটো কিছু কাজ করে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করা যায়।আপনি যদি অনলাইনে বেশি পরিমাণ টাকা আয় করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ডেক্সটপ কিংবা কম্পিউটার নিতে হবে। তাহলে আপনি লাইফ টাইমের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করতে পারেন।
আসলে মোবাইল দিয়ে ছোটখাটো কাজ করে টাকা আয় করা যায়। তা লাইফ টাইমের জন্য নয়। এই আর্টিকেলে সরকারি ইনকাম সাইট, সরকারি অনুমোদিত অনলাইন ইনকাম, সরকার অনুমোদিত ইনকাম app
ও সরকার অনুমোদিত অনলাইন ইনকাম সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন পোস্টটি শুরু করা যাকঃ
সরকারি ইনকাম সাইট?
সরকারি সাইটে টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে সব সময় সরকারি ওয়েবসাইট গুলোতে নজর রাখতে হবে। সরকার প্রতি তিন থেকে চার বছর পর পর আদমশুমারির জরিপ এবং অন্যান্য ছোট ছোট কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
আর সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে আদমশুমারি, জরিপ এবং অন্যান্য ছোট কাজের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। তাহলে আদমশুমারি এবং জরিপ করে অল্প কিছুদিন কাজ করার মাধ্যমে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
এবং উক্ত আদমশুমারি এবং জরিপ আপনাকে অনলাইনে জমা দিতে হবে। আর এই কাজগুলে করার জন্য আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা আপনি এই কাজ পারবেন না। নিচে কিছু ইনকাম সাইট তুলে ধরা হলোঃ
১. LICT Project (Leveraging ICT for Growth, Employment & Governance)
এই প্রকল্পটি পরিচালনা করছে ICT Division ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (BCC)। LICT-এর মাধ্যমে দেশের হাজারো তরুণ-তরুণীকে ফ্রিল্যান্সিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
আয়ের সুযোগ
প্রশিক্ষণ শেষে আপনি Fiverr, Upwork, Freelancer সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ করে আয় করতে পারবেন। LICT সনদপ্রাপ্তদের জন্য বিভিন্ন মেলা, কর্মসংস্থান এবং প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ থাকে।
ওয়েবসাইট
২. ShePower প্রকল্প (ICT for Women Empowerment)
নারীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে ICT Division পরিচালিত এই প্রকল্পটি নারীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
আয়ের সুযোগ
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো ফ্রিল্যান্সিং কাজে অংশ নিতে পারেন। সরকারী সার্টিফিকেট ও অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজের দিকনির্দেশনা সহায়তা করা হয়।
ওয়েবসাইট
৩. BD Skills (skills.gov.bd)
এই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন পোর্টালটি বাংলাদেশের সব সরকারি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করছে। এখানে আপনি সরকারি প্রোগ্রাম অনুযায়ী ফ্রিতে বিভিন্ন স্কিল শিখতে পারবেন।
আয়ের সুযোগ
অনলাইনে কোর্স শেষ করে আপনাকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয় এবং প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক চাকরির সুযোগ তৈরি হয়। বিশেষভাবে দক্ষরা ফ্রিল্যান্সিং কিংবা উদ্যোক্তা হিসেবেও কাজ শুরু করতে পারেন।
ওয়েবসাইট
৪. কর্মসংস্থান ব্যাংক (Karmasangsthan Bank)
বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত এই ব্যাংকটি বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান করে। আপনি ব্যবসা করতে চান, এমনকি অনলাইন বা ডেলিভারি ব্যবসা তাহলেও এই ব্যাংকের ঋণ নিতে পারেন।
আয়ের সুযোগ
সরকারি ঋণের মাধ্যমে ছোট ব্যবসা বা স্টার্টআপ গড়ে তোলার সুযোগ। গ্রামীণ বা শহর – সব জায়গায় কার্যকর।
ওয়েবসাইট
৫. Youth Development Department (যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর)
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তরুণদের জন্য পরিচালনা করে নানা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, যেমন – সেলাই, মোবাইল সার্ভিসিং, কম্পিউটার, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি।
আয়ের সুযোগ
প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি বা স্বনির্ভরভাবে ব্যবসা/অনলাইন ইনকাম করার সুযোগ। প্রশিক্ষণকারীদের মাঝে অনেকেই ফাইভার, আপওয়ার্কে কাজ শুরু করেছেন।
ওয়েবসাইট
৬. a2i Program (Access to Information)
a2i হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি উদ্যোগ যা জনগণকে ডিজিটাল সেবা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে।
আয়ের সুযোগ
“উদ্যমী তরুণ” প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ডেটা এন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন।
ওয়েবসাইট
৭. Digital Center (ডিজিটাল সেন্টার)
বাংলাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪৫০০+ ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে যেখান থেকে সরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়। এসব সেন্টারে কাজ করে আপনিও ইনকাম করতে পারেন।
আয়ের সুযোগ
অনলাইন জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সেবা, আবেদন ফর্ম পূরণ, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে প্রতিদিন আয় করা যায়।
ওয়েবসাইট
https://www.digitalbangladesh.gov.bd
৮. ICT Division-এর “Freelancer to Entrepreneur” প্রজেক্ট
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষ উদ্যোক্তায় রূপান্তর করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। এখানে উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার ফ্রিল্যান্স টিম গড়ার সহায়তাও করা হয়।
আয়ের সুযোগ
অনলাইনে নিজস্ব ক্লায়েন্ট তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদে আয় করা, অথবা ছোট টিম পরিচালনার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং বিজনেস চালানো।
ওয়েবসাইট
৯. Startup Bangladesh Limited
এটি আইসিটি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি। যেসব তরুণ উদ্যোক্তা নিজেদের স্টার্টআপ শুরু করতে চান, তাদেরকে আর্থিক সহায়তা ও মেন্টরশিপ প্রদান করে।
আয়ের সুযোগ
আপনার আইডিয়া বা অনলাইন ভিত্তিক প্রজেক্ট থাকলে Startup Bangladesh থেকে ফান্ড নিয়ে ব্যবসা শুরু করে বড় আকারে আয় করা সম্ভব।
ওয়েবসাইট
https://www.startupbangladesh.vc
১০. eLearning Platform by Bangladesh Open University (BOU)
বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটি অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন কোর্স ও প্রশিক্ষণ চালু করেছে, যার মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষার পাশাপাশি আপনি স্কিল ডেভেলপ করে ইনকামের পথ খুলে নিতে পারেন।
আয়ের সুযোগ
কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা এমন সব কোর্স শেষ করে আপনি চাকরি কিংবা ফ্রিল্যান্সিং-এ যাত্রা শুরু করতে পারেন।
ওয়েবসাইট
১১. জাতীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র, সাভার (National Youth Training Centre)
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এই প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি যুবদের প্রযুক্তি, হস্তশিল্প, শিল্পকলা, কম্পিউটার শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
আয়ের সুযোগ
এই প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিজের পছন্দমতো কাজ শুরু করা বা সরকারি সহযোগিতায় ক্ষুদ্র ব্যবসা চালু করে নিয়মিত আয় করা যায়।
ওয়েবসাইট
১২. “Amar Ghar Amar Khamar” (একটি বাড়ি একটি খামার) প্রকল্প
সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারকে উদ্যোক্তা বানানোর লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আয়-উৎপাদন কার্যক্রমে উৎসাহিত করা হয়।
আয়ের সুযোগ
আপনি যদি গরু পালনের খামার, হাঁস-মুরগি বা কৃষি-সম্পর্কিত কাজ শুরু করতে চান, তাহলে সরকার ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করে।
ওয়েবসাইট
১৩. Bangladesh Krishi Bank (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক)
এই ব্যাংক সরকার পরিচালিত কৃষি ও উদ্যোক্তা সহায়তা কেন্দ্র। যারা কৃষিকাজ, হাঁস-মুরগির খামার বা কুটির শিল্পে আগ্রহী তাদেরকে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে ইনকামের সুযোগ করে দেয়।
আয়ের সুযোগ
সরকারি প্রণোদনায় খামার গড়ে তোলা, কৃষিভিত্তিক ব্যবসা শুরু করা ও উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে নিয়মিত আয় করা যায়।
ওয়েবসাইট
১৪. Bangladesh Post Office: e-Commerce Logistics (ePost)
বাংলাদেশ পোস্ট অফিস এখন অনলাইন ব্যবসায়ীদের জন্য পণ্য ডেলিভারি ও পেমেন্ট সংগ্রহের সেবা দিচ্ছে। যারা নিজের ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান, তারা পোস্ট অফিসের ePost Logistics সেবা ব্যবহার করে সরকারি সুবিধা পেতে পারেন।
আয়ের সুযোগ
নিজের তৈরি পণ্য বা রিসেলার প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে সারা দেশে পাঠিয়ে আয় করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট
১৫. জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA – National Skills Development Authority)
এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একটি সংস্থা, যার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনগণকে আন্তর্জাতিক মানের স্কিলড কর্মীতে রূপান্তরিত করা।
আয়ের সুযোগ
আপনি সরকারি অনুমোদিত স্কিল সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশি-বিদেশি চাকরির সুযোগ পেতে পারেন বা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।
ওয়েবসাইট
১৬. জাতীয় মহিলা সংস্থা (Bangladesh National Women’s Association)
নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সরকারি এই সংস্থা সেলাই, বুটিক, কম্পিউটার, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ বিভিন্ন কোর্স বিনামূল্যে করায়।
আয়ের সুযোগ
নারীরা ঘরে বসেই অনলাইন ব্যবসা বা ঘরোয়া কারিগরি কাজে যুক্ত হয়ে আয় করতে পারেন। প্রশিক্ষণের পর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ ও অনুদানের সুযোগও রয়েছে।
ওয়েবসাইট
১৭. বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (BTEB)
কারিগরি শিক্ষাকে জনপ্রিয় করতে BTEB পরিচালনা করছে বিভিন্ন ডিপ্লোমা ও ট্রেড কোর্স, যেগুলোর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে স্কিলড হয়ে আয় শুরু করা যায়।
আয়ের সুযোগ
কম্পিউটার অপারেটর, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েল্ডিং, ইলেকট্রিক, টাইলস সেটিং এমন ট্রেড কোর্সের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইট
১৮. উদ্যোক্তা উন্নয়ন ফোরাম (Entrepreneurship Development Program – EDP)
বাংলাদেশ ব্যাংক ও SME Foundation এর আওতায় ছোট উদ্যোক্তাদের তৈরি করতে এই প্রোগ্রাম চলে। ব্যবসায়িক আইডিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
আয়ের সুযোগ
আপনি যদি ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে এগোতে চান, তাহলে সরকার আপনার জন্য বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও নেটওয়ার্কিং-এর সুযোগ করে দেয়।
ওয়েবসাইট
১৯. জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (District Employment & Manpower Office)
প্রবাসে বৈধভাবে কাজ করতে ইচ্ছুকদের জন্য এই অফিস থেকে ভিসা, ভাষা প্রশিক্ষণ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করা হয়। বিদেশে কর্মসংস্থান বড় এক সরকারি ইনকাম উৎস।
আয়ের সুযোগ
জাপান, কোরিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠিয়ে সরকার বৈধ উপায়ে আয় করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
ওয়েবসাইট
২০. বিসিক (BSCIC – বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন)
বাংলাদেশ সরকার উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিসিকের মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অর্থায়ন করে থাকে।
আয়ের সুযোগ
হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিজস্ব পণ্য উৎপাদন ও অনলাইনে বিক্রি করে আয় করা যায়। বিসিক থেকে ট্রেনিং ও ফান্ডিং সহায়তা পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইট
সরকার অনুমোদিত অনলাইন ইনকাম সাইট?
সরকার অনুমোদিত কয়েকটি অনলাইন ইনকাম ওয়েবসাইট আছে। যেগুলোর মাধ্যমে আপনি চাইলে টাকা ইনকাম করতে পারেন। নিচে সরকার অনুমোদিত অনলাইন ইনকাম সাইটের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- বিকাশ অ্যাপ
- নগদ অ্যাপ
- উবার অ্যাপ
- পাঠাও অ্যাপ
অনলাইন ইনকাম সাইট?
অনলাইনে টাকা ইনকামের অনেক ওয়েবসাইট আছে। যে ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি লাইফটাইম পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। কিন্তু তার জন্য লাগবে আপনার ধৈর্য শক্তি। নিচে অনলাইন ইনকাম সাইটের তালিকা দেওয়া হলোঃ
১. Shutter stock
শাটার স্টক হচ্ছে অনলাইনে ছবি আপলোড করে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার জন্য সব থেকে জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট।
আপনি যদি ছবি তোলায় খুবেই পারদর্শী হয়ে থাকেন। তাহলে এই ওয়েবসাইটে আপনার তোলা ছবিটি বিক্রি করার মাধ্যমে মাসে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন।
২. YouTube
ইউটিউব হচ্ছে অনলাইনে ঘরে বসে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ একটি মাধ্যম। ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে আপনি সারা জীবন কাজ করতে পারেন।
সেক্ষেত্রে আপনার ভিডিও বানানোর দক্ষতা থাকা লাগবে ও ভিডিও এডিট করার দক্ষতা থাকতে হবে। তাহলে আপনি মাস শেষে ভাল পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন।
৩. Facebook
ইউটিউবের মতো ফেসবুকে আপনি একটি পেজ খুলে সেখানে ভিডিও বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করতে পারেন।
সেক্ষেত্রেও আপনার ভিডিও বানানোর দক্ষতা এবং ভিডিও এডিট করার দক্ষতা লাগবে। আপনি যদি ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করেন, তাহলে মাস শেষে ভাল পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।
৪. Upwork
ফাইবারের মতো upwork হলো একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। যেখানে আপনার স্কিলকে কাজে লাগিয়ে মাস শেষে হিউজ পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে।
যেমনঃ কোডিং করার দক্ষতা, ভিডিও এডিট করার দক্ষতা, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করার দক্ষতা, ফটোশপে কাজ করার দক্ষতা, কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি আরো অনেক কাজ রয়েছে। যেগুলো আপনাকে সঠিকভাবে জানতে হবে।
এর মধ্যে সব কাজেই জানতে হবে তা নয়। যেকোন একটি বিষয়ে আপনাকে খুব ভালভাবে জানতে হবে। তাহলে ওই সেক্টরে কাজ করে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারেন।
৫. Fiverr
ফাইবার হচ্ছে অনলাইন জগতের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস। এখানে দেশি ও বিদেশি অনেক ফ্রিল্যান্সার কাজ করেন। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে ফাইবার।
এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে মাস শেষে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। এজন্য আপনার অনলাইন ভিত্তিক যেকোন একটি কাজের দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
নতুবা আপনি এই সাইটে কাজ করতে পারবেন না। যেমনঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কোডিং করা, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজ জানা থাকতে হবে।
স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম?
একমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই অনলাইনে টাকা ইনকাম করার একটি বড় সুযোগ। ছাত্র-ছাত্রীরন চাইলে তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি ঘরে বসেই অনলাইনে টাকা আয় করতে পারেন।
কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য এবং ধারাবাহিকতা। কারণ অনলাইন সেক্টরে কাজ করতে গেলে ধারাবাহিকতা এবং ধৈর্য না থাকলে আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না।
আজকাল চাকরির বাজারে যে পরিমাণ কম্পিটিশন, সেই কম্পিটিশনের মাঝে পড়াশুনা করে ভাল চাকরি করার স্বপ্ন না দেখাই ভাল হবে। তার চেয়ে স্টুডেন্ট লাইফ থেকে যদি অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করা যায়।
তাহলে ভবিষ্যতে চাকরি নিয়ে আর তেমন কোন ধরনের চিন্তা করা লাগবে না। আর সেজন্য স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই চাইলে ব্লগিং ও ইউটুবিং করেও টাকা আয় করা যেতে পারে।
অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে?
মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার সহজ কিছু ওয়েবসাইট আছে। যেগুলোতে আপনি ছোট কিছু কাজ করে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো মাইক্রো ওয়ার্কার।
মাইক্রো ওয়ার্কারছে ছোট ছোট কাজ যেমনঃ ইমেইল খুলে দেওয়া, বিভিন্ন ধরনের এডস দেখা, ইউটিউব ভিডিও দেখা, লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করা, ফেসবুক আইডি খুলে দেওয়া ইত্যাদি কাজ করে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন।
প্রতিদিন ১০০০ টাকা অনলাইন ইনকাম?
প্রতিদিন ১০০০ টাকা অনলাইনে ইনকাম করা যায় এমন কিছু বাংলাদেশী ওয়েবসাইট রয়েছে। যেমনঃ workuplace, onesteptask, bartamanit এই সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট কাজ করে টাকা আয় করতে পারেন।
এ ধরনের আরোও অনেক মাইক্রো জবস সাইট আছে, এই সাইট গুলোতে কাজ করার মাধ্যমে মোবাইল দিয়েই মাস শেষে ভাল পরিমান টাকা অনলাইনে আয় করতে পারেন।
গুগল থেকে টাকা ইনকাম?
আপনি চাইলে গুগল থেকে টাকা আয় করতে পারেন। গুগল থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা। গুগোলে আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে।
তাহলে সেখান থেকে আপনি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে প্রতি মাসে অনেক ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন আর্টিকেল লেখার দক্ষতা এবং ধৈর্য।
গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়?
গুগল এডসেন্স থেকে টাকা করতে হলে আপনার একটি ব্লগ স্পট অথবা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট থাকা প্রয়োজন। ওয়েবসাইট তৈরি ছাড়াও আপনি গুগলের অনেক সার্টিফাইড প্ল্যাটফর্ম পাবেন।
যেখান থেকে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। গুগল এডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে টাকা আয় করা হয়। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে
সেখানে গুগলের বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন শো করার মাধ্যমে আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা যোগ হবে। এভাবে মাস শেষে ভাল পরিমাণের একটি টাকা আয় হবে।
টাকা আয় করার জন্য গুগল এডসেন্স থেকে গুগলে একটি ওয়েব সাইট থাকা প্রয়োজন। এই উপরের সাইটগুলোতে বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করতে পারেন। কোন ধরনের সমস্যা ছাড়াই। আশা করছি আপনারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
আরও পড়ুনঃ বসে না থেকে ত্রই apps দিয়ে 300 টাকা ইনকাম করুন .কাজ করা খুব সোজা
FAQs: সরকারি ইনকাম সাইট
প্রশ্ন ১: সরকার কি সরাসরি টাকা দেয় ইনকামের জন্য?
উত্তর: না, সরকার সরাসরি কাউকে টাকা দেয় না। তবে সরকার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা সহায়তা, ক্ষুদ্র ঋণ, এবং ফ্রিল্যান্সিং স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট চালায় যেগুলোতে অংশগ্রহণ করে দক্ষতা অর্জন করে আপনি আয় শুরু করতে পারেন।
প্রশ্ন ২: সরকারি এই ইনকাম প্ল্যাটফর্মগুলোতে কিভাবে আবেদন করব?
উত্তর: প্রতিটি প্রকল্প বা ওয়েবসাইটে (যেমন skills.gov.bd, lict.gov.bd, dyd.gov.bd) নিবন্ধন বা আবেদন ফর্ম দেওয়া থাকে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে আপনি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন।
প্রশ্ন ৩: অংশগ্রহণে কোনো খরচ আছে কি?
উত্তর: বেশিরভাগ কোর্স বা প্রশিক্ষণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ফি বা কাগজপত্রের খরচ হতে পারে, তবে তা অতি সামান্য।
প্রশ্ন ৪: প্রশিক্ষণের পর সরকার কি চাকরির ব্যবস্থা করে?
উত্তর: না, সরকার সরাসরি চাকরি দেয় না। তবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে স্কিল আপনি শিখবেন, তা দিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন, চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন বা উদ্যোক্তা হতে পারেন। কিছু প্রকল্পে চাকরি সংযোগ মেলারও আয়োজন করা হয়।
প্রশ্ন ৫: আমি একজন নারী — আমার জন্য আলাদা কোনো সরকারি ইনকাম সাইট আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, যেমন “ShePower Project”, “জাতীয় মহিলা সংস্থা”, “বিসিক নারী উদ্যোক্তা প্রোগ্রাম” এসব নারী উদ্যোক্তা ও স্কিল ডেভেলপমেন্টে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ৬: সরকারি প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব?
উত্তর: আপনি Fiverr, Upwork, Freelancer.com ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলে কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বেশিরভাগ সরকারি প্রশিক্ষণেই এসব বিষয়ে গাইডলাইন দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৭: প্রশিক্ষণ শেষে কি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোর্স সম্পন্ন করার পরে সরকারি সনদ প্রদান করা হয়, যা ভবিষ্যতের চাকরি বা প্রজেক্টে ব্যবহার করা যায়।
প্রশ্ন ৮: সরকারি প্রশিক্ষণ ও ইনকাম প্ল্যাটফর্মে অংশ নিতে বয়স কত হতে হয়?
উত্তর: সাধারণত ১৮–৩৫ বছর বয়সী যুবক-যুবতীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তবে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বয়স কিছুটা নমনীয় হতে পারে।
প্রশ্ন ৯: মোবাইল দিয়ে কি সরকারি কোর্স করা সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, অনেক সরকারি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন skills.gov.bd, bou.ac.bd ইত্যাদিতে মোবাইল দিয়ে কোর্স সম্পন্ন করা যায়।
প্রশ্ন ১০: বিদেশে চাকরির জন্য সরকারি কোনো ইনকাম সাইট বা সহযোগিতা আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, “BMET (www.bmet.gov.bd)” এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও বিদেশে চাকরির সহযোগিতা করা হয়। সরকারি অনুমোদিতভাবে বৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ১১: ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে চাই, কোন সরকারি প্রকল্প আমাকে সাহায্য করতে পারে?
উত্তর: “কর্মসংস্থান ব্যাংক”, “একটি বাড়ি একটি খামার”, “SME Foundation”, “BSCIC” – এসব প্রতিষ্ঠান আপনাকে ক্ষুদ্র ঋণ, প্রশিক্ষণ ও বাজারজাতকরণে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ১২: অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য কোন সরকারি প্রশিক্ষণ সবচেয়ে কার্যকর?
উত্তর: LICT Project, Skills.gov.bd ও Youth Development-এর ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণগুলো সবচেয়ে কার্যকর ও জনপ্রিয়। এখানে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন শেখানো হয়।
শেষ কথা
আশা করেছি সরকার অনুমোদিত অনলাইন ইনকাম সাইট সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন। অনলাইনে কাজ করলে সাথে সাথে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন না।
আপনি মনোযোগ সহকারে ধৈর্য নিয়ে এক বছর কাজ করলে, সফলতা আপনার একদিন আসবেই। সবাইকে ধন্যবাদ।