অনলাইন ইনকাম

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট বা ইন্টারনেট ভিত্তিক বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্মগুলো আধুনিক অর্থনীতি ও ডিজিটাল যুগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত কয়েক বছর ধরে এই ধরনের সাইটগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটএবং পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের মানুষ এখন এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে তাদের অর্থ বিনিয়োগ করছে। তবে এই ধরনের ইনভেস্টমেন্ট সাইটে বিনিয়োগ করার পূর্বে সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক সময় এই সাইটগুলো স্ক্যাম করে।

আর তাই আমরা আজকে এই সাইটগুলোর সঠিক কার্যক্রম, সুবিধা, ঝুঁকি এবং বিনিয়োগকারী হিসেবে আপনার কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, তা বিশদভাবে আলোচনা করবো।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট কি?

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম। যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সহজে এবং নিরাপদে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ করতে পারেন।

এসব সাইটে সাধারণত শেয়ার মার্কেট, মিউচুয়াল ফান্ড, ক্রিপ্টোকারেন্সি, রিয়েল এস্টেট, ফরেক্স ট্রেডিং এবং অন্যান্য ধরনের ইনভেস্টমেন্ট অপশন থাকে। এছাড়াও কিছু সাইটে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করার সুযোগ, যেমন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা ই-কমার্সও দেওয়া হয়।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট?

নিচে অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

১. Robinhood

এটি একটি মার্কিন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ETF (এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড), অপশন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেয়।

Robinhood এর একটি বিশেষত্ব হলো এটি কমিশন-ফ্রি ট্রেডিং অফার করে, অর্থাৎ আপনি শেয়ার বা অন্যান্য অ্যাসেট কেনা-বেচা করতে কোনো ট্রেডিং ফি দিতে হবে না। এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ এবং সুবিধাজনক একটি প্ল্যাটফর্ম।

২. ETRADE

ETRADE একটি পুরনো এবং বিশ্বস্ত ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং অপশন ট্রেডিং সেবা প্রদান করে। এটি সক্রিয় এবং প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট দুটো ধরনের বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত।

আপনি যদি নিয়মিত ট্রেডিং করতে চান বা পোর্টফোলিওর ম্যানেজমেন্টে সাহায্য চান, ETRADE তা দিতে পারে।

৩. Coinbase

ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি জনপ্রিয় সাইট হলো Coinbase। এখানে আপনি বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন সহ অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে এবং বিক্রি করতে পারেন।

Coinbase ব্যবহারে খুবই সহজ এবং এটি নিরাপদ সেবা প্রদান করে, তবে এর ফি কিছুটা বেশি হতে পারে।

৪. Binance

Binance হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ, যা বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, ডজকয়েন, এবং অন্যান্য অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সির ট্রেডিং সুবিধা দেয়। Binance বিশেষভাবে সক্রিয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত, কারণ এখানে বিভিন্ন ট্রেডিং টুলস এবং ফিচার রয়েছে।

৫. Stash

এটি ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম, যা তাদের সহজভাবে স্টক এবং ETF ইনভেস্টমেন্ট করতে সহায়তা করে।

Stash এর মাধ্যমে আপনি খুব কম টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন এবং এটি সাধারণত নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী।

৬. Fidelity

Fidelity একটি বিখ্যাত ব্রোকারেজ প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, ইটিএফ, বন্ড, এবং রিটায়ারমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট পরিষেবা প্রদান করে। Fidelity সস্তা কমিশন ফি এবং গবেষণার জন্য শক্তিশালী সরঞ্জাম সরবরাহ করে,

যা এটি নতুন এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় পছন্দ। এটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ উপকারী, যারা রিটায়ারমেন্ট প্ল্যানের জন্য একটি ভাল পোর্টফোলিও তৈরি করতে চান।

৭. Vanguard

Vanguard স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, এবং ইটিএফ-এর মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে। এটি বিশেষভাবে তার মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইনডেক্স ফান্ডের জন্য পরিচিত, যা সস্তা এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত।

Vanguard তার কম ফি এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট পরিষেবার জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়। এটি এমন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত যারা তাদের অর্থ দীর্ঘমেয়াদে রাখার পরিকল্পনা করে এবং শক্তিশালী সঞ্চয় করতে চান।

৮. Acorns

Acorns একটি ছোট বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে দৈনন্দিন খরচের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করতে সহায়তা করে। এটি “রাউন্ড আপ” ফিচার সরবরাহ করে, যার মাধ্যমে আপনি যখন কোনো জিনিস কেনেন,

তখন অতিরিক্ত কিছু পয়সা (যেমন ১ টাকার পরিবর্তে ১.৫০ টাকা) ইনভেস্টমেন্টে চলে যায়। এটি ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম, যারা নিয়মিত এবং ধীরে ধীরে বিনিয়োগ করতে চান।

৯. Wealthfront

Wealthfront একটি রোবো-এডভাইজর, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও তৈরি করে এবং পরিচালনা করে। এটি বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্ট যেমন স্টক, বন্ড এবং রিয়েল এস্টেট সহ কিছু পছন্দের অপশন দেয়।

Wealthfront স্বল্প ফি নিয়ে প্যাসিভ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট পরিষেবা প্রদান করে, যা দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় এবং পোর্টফোলিও বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত।

১০. Webull

Webull একটি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, অপশন, এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেয়। এটি অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের তুলনায় কিছুটা বেশি কার্যকরী এবং এর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী বিশ্লেষণ এবং চার্টিং টুলস,

যা ট্রেডারদের বাজারের গতি বুঝতে এবং লাভজনক ট্রেড সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি বিনামূল্যে ট্রেডিং এবং উচ্চতর ট্রেডিং সুবিধা দেয়, তবে এর ব্যবহার কিছুটা উন্নত ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত।

১১. Merrill Edge

Merrill Edge হচ্ছে Bank of America-র ব্রোকারেজ সেবা, যা স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়।

এটি Bank of America গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করে এবং তার ক্লায়েন্টদের জন্য এক্সক্লুসিভ ফিচার সরবরাহ করে, যেমন বিনামূল্যে রিসার্চ রিপোর্ট এবং বিনিয়োগ পরামর্শ।

১২. SoFi Invest

SoFi Invest হলো একটি অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ETF, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। SoFi এর মাধ্যমে আপনি যে কোনো পরিমাণ অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন।

এটি নতুন এবং মাঝারি স্তরের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভালো পছন্দ, কারণ এতে ন্যূনতম বিনিয়োগের পরিমাণ খুব কম এবং কোনো কমিশন ফি নেই।

আরও পড়ুনঃ বিনা টাকায় ইনকাম

১৩. Betterment

Betterment একটি রোবো-এডভাইজর প্ল্যাটফর্ম, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও তৈরি ও পরিচালনা করে। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বিনিয়োগ সেবা প্রদান করে,

যার মাধ্যমে আপনি শুধু আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন এবং বাকি কাজ রোবো-এডভাইজর করবে। Betterment মিউচুয়াল ফান্ড, ETF এবং অন্যান্য কম ঝুঁকির বিনিয়োগের সুযোগ দেয় এবং এটি লং-টার্ম বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত।

১৪. Charles Schwab

Charles Schwab একটি পূর্ণাঙ্গ ব্রোকারেজ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে আপনি স্টক, অপশন, মিউচুয়াল ফান্ড, ETF, এবং অন্যান্য বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। এটি বিনামূল্যে ট্রেডিং সেবা প্রদান করে এবং কম খরচে পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট ও বিনিয়োগ পরামর্শ প্রদান করে।

Charles Schwab নতুন এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ সুবিধাজনক, কারণ এতে উঁচু মানের সেবা এবং শক্তিশালী রিসার্চ টুলস রয়েছে।

১৫. Public.com

Public.com একটি সামাজিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের সময় সামাজিক যোগাযোগের সুযোগ দেয়।

আপনি অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও দেখতে পারেন, তাদের ট্রেডিং স্টাইল অনুসরণ করতে পারেন এবং আলোচনা করতে পারেন। এটি কমিশন-ফ্রি ট্রেডিং সুবিধা দেয় এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।

১৬. RealtyMogul

RealtyMogul একটি রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যা বিনিয়োগকারীদের রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। এটি আপনাকে কম প্রাথমিক মূলধন দিয়ে রিয়েল এস্টেট বাজারে বিনিয়োগ করতে সহায়তা করে।

আপনি বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট বা আবাসিক রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন, যা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী এবং লাভজনক হতে পারে।

১৭. Fundrise

Fundrise একটি রিয়েল এস্টেট ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম যা বিনিয়োগকারীদের রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে আপনি কম মূলধনে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং দীর্ঘমেয়াদে ভাল লাভ পেতে পারেন। Fundrise সস্তা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

১৮. M1 Finance

M1 Finance একটি স্বয়ংক্রিয় বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ETF এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট সেবা প্রদান করে। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি টুলস প্রদান করে যার মাধ্যমে তারা তাদের পছন্দসই পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারেন এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।

M1 Finance এর মাধ্যমে আপনি বিনামূল্যে ট্রেডিং করতে পারেন এবং এটি সেভিংস এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্টও ম্যানেজ করতে সহায়ক।

১৯. Interactive Brokers

Interactive Brokers হলো একটি পেশাদারী ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা সক্রিয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত। এখানে আপনি স্টক, অপশন, ফিউচারস, ক্রিপ্টোকারেন্সি, এবং অন্যান্য ফিনান্সিয়াল ইনস্ট্রুমেন্টের ট্রেডিং করতে পারেন।

এটি অত্যন্ত কম ট্রেডিং ফি এবং শক্তিশালী বিশ্লেষণ সরঞ্জাম প্রদান করে, তবে নতুন বা অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি কিছুটা জটিল হতে পারে।

২০. Acorns

Acorns একটি অ্যাপ-ভিত্তিক রোবো-এডভাইজর প্ল্যাটফর্ম, যা আপনাকে ছোট পরিমাণ অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ করতে সহায়তা করে।

এটি দৈনন্দিন খরচের মাধ্যমে “রাউন্ড-আপ” ফিচার ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার বিনিয়োগে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে। এটি মূলত নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত যারা ধীরে ধীরে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে বিনিয়োগ শুরু করতে চান।

২১. Ally Invest

Ally Invest, Ally Financial এর একটি শাখা, যা একটি কম খরচের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। এটি স্টক, অপশন, ETF, এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্টের জন্য উপযুক্ত।

Ally Invest ব্যবহারকারীদের জন্য শক্তিশালী রিসার্চ টুলস, কম ট্রেডিং ফি এবং সহজ ইন্টারফেস প্রদান করে, যা এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত একটি সেবা।

২২. LendingClub

LendingClub একটি পিয়ার-টু-পিয়ার (P2P) লোন প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে বিভিন্ন ঋণগ্রহীতাদের কাছে আপনার বিনিয়োগ প্রদান করতে দেয়। এটি একটি বিকল্প ঋণ দেওয়ার প্ল্যাটফর্ম,

যা আপনাকে সরাসরি ঋণগ্রহীতাদের থেকে সুদের মাধ্যমে লাভ অর্জন করতে সহায়তা করে। এই ধরনের ইনভেস্টমেন্টে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, কারণ ঋণগ্রহীতা তাদের ঋণ পরিশোধ না করতে পারে।

২৩. Zerodha

Zerodha ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ফিউচারস, অপশন এবং কমোডিটিতে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। এটি ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ব্রোকারেজ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।

Zerodha এর বড় সুবিধা হলো এর কম কমিশন ফি এবং শক্তিশালী ট্রেডিং টুলস, যা ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত। এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্যও সহজ, কারণ এর ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস এবং ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।

২৪. Kiva

Kiva একটি পিয়ার-টু-পিয়ার লোন প্ল্যাটফর্ম, যা উন্নয়নশীল দেশের উদ্যোক্তাদের সাহায্য করার জন্য কাজ করে। আপনি আপনার পছন্দসই উদ্যোক্তার কাছে ছোট ঋণ প্রদান করতে পারেন, এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধ করলে আপনি আপনার অর্থ পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

এটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বিনিয়োগের একটি দারুণ উপায় এবং খুবই কম ঝুঁকি থাকে, তবে লাভ তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।

২৫. Turo

Turo একটি অনলাইন ভেহিকল রেন্টাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি আপনার গাড়ি বা অন্য কোনো যানবাহন ভাড়া দিয়ে আয় করতে পারেন। এটি একটি ভিন্ন ধরনের ইনভেস্টমেন্ট অপশন, যেখানে আপনি আপনার পণ্য (গাড়ি) দিয়ে আয় করতে পারেন।

Turo আপনার গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সুযোগ প্রদান করে এবং এই প্ল্যাটফর্মে আপনার গাড়ির নিরাপত্তা এবং আয় পরিচালনা করার জন্য একটি ব্যবহারকারী বান্ধব সিস্টেম রয়েছে।

২৬. PeerStreet

PeerStreet একটি রিয়েল এস্টেট ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম যা রিয়েল এস্টেট লোন প্রজেক্টে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। আপনি আপনার ছোট বিনিয়োগের মাধ্যমে রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টগুলিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং সুদ লাভ করতে পারেন।

এটি একটি সুষম এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হতে পারে, কারণ প্রোজেক্টগুলি সুরক্ষিত এবং বৈধ। তবে, সাধারণ রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগের মতো এখানে ততটা উচ্চ লাভ আশা করা যায় না।

২৭. Vaulted

Vaulted একটি সোনা ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে সোনা কেনার এবং দীর্ঘমেয়াদী ইনভেস্টমেন্ট করার সুযোগ দেয়। সোনা একটি ঐতিহ্যগত এবং সুরক্ষিত বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত, যা বিশেষভাবে মূল্যবৃদ্ধি হতে থাকে।

Vaulted আপনাকে সোনা ক্রয় করতে এবং এটি একটি ডিজিটাল অ্যাকাউন্টে সংরক্ষণ করতে দেয়, যেখানে সোনার বাস্তব মালিকানাও থাকবে।

আরও পড়ুনঃ কয়েন দিয়ে টাকা ইনকাম

২৮. Yieldstreet

Yieldstreet একটি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্ম যা বিভিন্ন অ্যাল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্টের সুযোগ প্রদান করে, যেমন রিয়েল এস্টেট, শিপিং, আর্ট এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রোজেক্ট।

Yieldstreet উচ্চ-মুনাফা পাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে, তবে এটি কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি সেইসব বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত যারা কিছু নতুন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ বিনিয়োগ করতে চান।

২৯. Fundbox

Fundbox একটি লোন প্ল্যাটফর্ম, যা ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করে। এখানে আপনি ব্যবসায়ীদের থেকে সরাসরি ঋণ প্রদান করতে পারেন, এবং বিনিয়োগকারীরা সুদের মাধ্যমে লাভ পেতে পারেন।

এটি একটি ভালো বিকল্প হতে পারে যদি আপনি ব্যবসায়িক ঋণ প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করতে চান। তবে, ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, যেমন ঋণগ্রহীতা যদি ঋণ পরিশোধ না করতে পারে।

৩০. Robo-advisors

Robo-advisors হলো একটি স্বয়ংক্রিয় বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম, যা আপনার বিনিয়োগ পোর্টফোলিওকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনা করে। কিছু জনপ্রিয় রোবো-এডভাইজর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে Betterment, Wealthfront এবং M1 Finance অন্তর্ভুক্ত।

রোবো-এডভাইজরগুলি আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য ও ঝুঁকি সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে একটি কাস্টমাইজড পোর্টফোলিও তৈরি করে এবং তাকে নিয়মিতভাবে আপডেট করে, যা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য বেশ কার্যকরী।

৩১. WiseBanyan

WiseBanyan একটি রোবো-এডভাইজর সেবা যা বিনামূল্যে আপনার বিনিয়োগ পোর্টফোলিও পরিচালনা করে। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য সস্তা এবং সহজ অ্যাক্সেসযোগ্য সেবা প্রদান করে, যার মাধ্যমে আপনার বিনিয়োগগুলো লং-টার্মের জন্য বাড়ানো সম্ভব।

WiseBanyan হল একটি এন্টারপ্রাইজভিত্তিক রোবো-এডভাইজর সেবা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট এবং বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন সুযোগ প্রদান করে।

৩২. Acorns Later

Acorns Later হলো Acorns এর একটি রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট সুবিধা। এটি আপনার রিটায়ারমেন্টের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা সঞ্চয় করতে সহায়তা করে,

যেখানে “রাউন্ড আপ” ফিচারের মাধ্যমে আপনার দৈনন্দিন খরচের উপর ভিত্তি করে অর্থ যোগ করা হয়। এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত, যারা সহজভাবে দীর্ঘমেয়াদী রিটায়ারমেন্ট সঞ্চয় করতে চান।

৩৩. Stash

Stash একটি সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম যা নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত। এটি বিভিন্ন বিনিয়োগ অপশন যেমন স্টক, ETF এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট সরবরাহ করে এবং আপনার সঞ্চয়কে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনভেস্টমেন্টে পরিণত করতে সাহায্য করে।

Stash এ আপনি মাত্র $5 দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন এবং এটি কম ঝুঁকির সঙ্গে শুরু করার জন্য একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।

৩৪. Crypto.com

Crypto.com একটি জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম যা বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, এবং অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়।

এটি ক্রিপ্টো ট্রেডিং, স্টেকিং এবং লোন সুবিধা সরবরাহ করে, এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এটি সেইসব বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত যারা ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগ করতে চান।

৩৫. Benzinga Pro

Benzinga Pro একটি পেশাদার স্টক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম, যা নির্ভুল স্টক মার্কেট তথ্য এবং বিশ্লেষণ সরবরাহ করে। এটি ট্রেডারদের জন্য একটি শক্তিশালী টুলস প্যাকেজ প্রদান করে, যা বাজারের পরিবর্তন শীঘ্রই শনাক্ত করতে সহায়ক হতে পারে। Benzinga Pro একটি প্রিমিয়াম পরিষেবা এবং এটি সক্রিয় ট্রেডারদের জন্য বেশ উপযোগী।

৩৬. Merrill Lynch

Merrill Lynch (এখন Bank of America Merrill Lynch নামে পরিচিত) একটি বিশাল বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান যা পেশাদারী বিনিয়োগ পরামর্শ, স্টক, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড,

এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট সেবা প্রদান করে। এটি উচ্চ-মূল্যের পরিষেবা এবং পরামর্শ প্রদান করে, তবে এর ফি কিছুটা বেশি হতে পারে।

৩৭. BlockFi

BlockFi একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি লোন এবং সেভিংস প্ল্যাটফর্ম, যা ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর সুদ প্রদান করে। আপনি যদি বিটকয়েন বা অন্য কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সি রাখেন,

তবে আপনি BlockFi তে সেই ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর সুদ উপার্জন করতে পারেন। এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে আয় করার একটি উপায় এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত অন্য সকল সুবিধা সরবরাহ করে।

৩৮. Sofi Active Investing

Sofi Active Investing একটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ETF এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য বিনামূল্যে ট্রেডিং সুবিধা এবং একটি শক্তিশালী বিশ্লেষণ টুলস সরবরাহ করে।

আপনি বিনামূল্যে স্টক ট্রেডিং করতে পারবেন এবং এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সহজ এবং ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্ম।

৩৯. TradeStation

TradeStation একটি পেশাদার ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, অপশন, ফিউচারস, এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। এটি কম কমিশন ফি এবং শক্তিশালী বিশ্লেষণ সরঞ্জাম প্রদান করে, যা সক্রিয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত।

TradeStation একটি অত্যন্ত উন্নত ট্রেডিং টুল সরবরাহ করে এবং পেশাদার ট্রেডিং অভিজ্ঞতার জন্য উপযুক্ত।

৪০. PineBridge Investments

PineBridge Investments একটি গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান যা মিউচুয়াল ফান্ড, স্টক এবং বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়।

এটি উন্নত মানের গবেষণা এবং বিশ্লেষণ সরবরাহ করে, যা পেশাদার এবং উচ্চ-মূল্যের বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী। PineBridge দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি ভালো পছন্দ হতে পারে।

৪১. Wealthsimple

Wealthsimple একটি রোবো-এডভাইজর প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, ETF এবং রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। এটি একটি সস্তা এবং সহজে ব্যবহৃত সেবা প্রদান করে।

যেখানে আপনার বিনিয়োগের জন্য একটি কাস্টমাইজড পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। Wealthsimple একটি বিশেষ সুবিধা হিসেবে ট্যাক্স-এফেক্টিভ বিনিয়োগ পরামর্শও দেয়।

৪২. Upstox

Upstox একটি জনপ্রিয় ভারতীয় ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম যা স্টক, ফিউচারস, অপশন, এবং কমোডিটি ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেয়। এটি একটি অত্যন্ত কম খরচে ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম, যা বিশেষত ভারতের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়। Upstox এর সহজ ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্ম এবং শক্তিশালী ট্রেডিং টুলস ট্রেডারদের জন্য উপকারী।

৪৩. Questrade

Questrade কানাডার একটি ব্রোকারেজ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যা স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, ETF, এবং অপশন ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেয়। এটি কম কমিশন ফি এবং উন্নত ট্রেডিং সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

Questrade কানাডিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য একেবারে উপযুক্ত, যারা কম খরচে এবং পেশাদার ট্রেডিং টুলস চাচ্ছেন।

৪৪. Coinbase

Coinbase একটি জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম, যা বিটকয়েন, ইথেরিয়াম এবং অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়।

এটি একটি সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম, যা নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত।

আরও পড়ুনঃ কোন অ্যাপ রিয়েল টাকা দেয়

৪৫. CrowdStreet

CrowdStreet একটি রিয়েল এস্টেট ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে বড় রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্টে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। এটি বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে সরাসরি বিনিয়োগের জন্য একটি পোর্টাল সরবরাহ করে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য উপযুক্ত হতে পারে।

এটি মূলত উচ্চ-মূল্যের বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী, যারা বড় রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্টে অংশগ্রহণ করতে চান।

৪৬. FundBox

FundBox একটি ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য পিয়ার-টু-পিয়ার লোন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ প্রদান করতে পারেন। এটি একটি সম্ভাবনাময় উপায় হতে পারে ব্যবসায়িক ঋণ দেওয়ার জন্য।

কিন্তু এটি কিছু ঝুঁকির সাথে আসে, কারণ ঋণগ্রহীতা যদি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, আপনি আপনার অর্থ হারাতে পারেন।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটের সুবিধা?

১. সহজ অ্যাক্সেস

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটগুলিতে বিনিয়োগ করতে কোনো শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন।

২. প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা

অনেক সাইট বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগের মৌলিক ধারণা এবং কৌশল শেখানোর জন্য অনলাইন কোর্স বা ওয়েবিনার সরবরাহ করে, যা নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই উপকারী।

৩. কম খরচে বিনিয়োগ

অনেক সাইটে কম খরচে বিনিয়োগ শুরু করা যায়। সুতরাং, আপনি যদি ছোট একটি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে চান তবে অনলাইন সাইটগুলি একটি ভালো পছন্দ হতে পারে।

৪. বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্ট অপশন

এক সাইটে একাধিক ইনভেস্টমেন্ট অপশন থাকে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ঝুঁকি কমিয়ে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন।

৫. স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা

বিশ্বাসযোগ্য অনলাইন সাইটগুলো সাধারণত তাদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বজায় রাখে এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটের ঝুঁকি?

১. স্ক্যাম বা প্রতারণা

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটের মধ্যে অনেক সাইট স্ক্যাম হতে পারে, যা আসলে বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এজন্য সাইটটি ব্যবহার করার আগে তার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

২. অতিরিক্ত ঝুঁকি

অনেক সময় অনলাইন সাইটে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষত, ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মতো বাজারগুলিতে বিনিয়োগে অনেক অস্থিরতা থাকে।

৩. ডেটা সুরক্ষা

কিছু সাইটে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বা ফিনান্সিয়াল ডেটা সুরক্ষিত না থাকার সম্ভাবনা থাকে, যা প্রাইভেসি লঙ্ঘন বা চুরির কারণ হতে পারে।

৪. বাজারের অস্থিরতা

বাজারের অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগে প্রাপ্ত লাভ বা ক্ষতি unpredictably হতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের আর্থিক পরিস্থিতির ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইট নির্বাচন করার সময় কী কী বিষয় লক্ষ্য করা উচিত?

১. বিশ্বাসযোগ্যতা এবং রেটিং

একটি সাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করতে তার রিভিউ এবং রেটিং পর্যালোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন অনলাইন ফোরামে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবহারকারীদের মতামত পড়ে দেখতে পারেন।

২. রেগুলেটরি অনুমোদন

সাইটটির যথাযথ নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে অনুমোদন আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। এটি সাইটটির বৈধতা এবং নিরাপত্তার একটি বড় সূচক।

৩. ফি এবং চার্জ

সাইটের ফি এবং চার্জের গঠন বুঝে নিন। কিছু সাইটে উচ্চ কমিশন বা লুকানো ফি থাকতে পারে, যা আপনার লাভের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।

৪. ব্যবহারকারী সহায়তা

২৪/৭ কাস্টমার সার্ভিস বা হেল্পডেস্ক সাপোর্ট থাকা সাইটগুলি বেশি সুবিধাজনক, বিশেষত যখন আপনি সমস্যায় পড়েন।

৫. ট্রেডিং টুলস এবং রিসোর্স

সাইটে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন টুলস এবং রিসোর্স (যেমন ট্রেডিং গ্রাফ, বিশ্লেষণ, মার্কেট রিসার্চ) থাকা উচিত, যা আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুনঃ ডিপোজিট ছাড়া ইনকাম সাইট

শেয়ার মার্কেটে অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট?

শেয়ার মার্কেট হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে একটি। অনলাইনে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে হলে, আপনাকে প্রথমে একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

কিছু সাইট ট্রেডিং অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহ করে, যার মাধ্যমে আপনি রিয়েল-টাইম শেয়ার ব্যবসা করতে পারবেন। শেয়ার মার্কেটের বাজার অস্থিরতা কিছুটা বেশি, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী লাভের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি ইনভেস্টমেন্ট?

ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো একটি ডিজিটাল মুদ্রা যা ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজি (ব্লকচেইন) ভিত্তিক। বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমানে অনেক বিনিয়োগকারীর আগ্রহের বিষয়।

তবে এর দাম অনেক অস্থির, এবং এই কারণে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের ঝুঁকি অনেক বেশি। এটি একটি অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল বাজার, এবং এর মধ্যে অনেক প্রতারণার শিকারও হতে পারেন।

ফরেক্স ট্রেডিং?

ফরেক্স ট্রেডিং হলো একটি আন্তর্জাতিক বাজার যেখানে এক দেশের মুদ্রা অন্য দেশের মুদ্রার বিপরীতে কেনাবেচা করা হয়। ফরেক্স ট্রেডিংয়ে বড় লাভের সম্ভাবনা থাকলেও, এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং এটি শুধুমাত্র অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত।

মিউচুয়াল ফান্ড?

মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করাও অনলাইন সাইটের মাধ্যমে সহজ হতে পারে। এটি একটি পুলড ইনভেস্টমেন্ট স্কিম যেখানে আপনার টাকা অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের সাথে একত্রিত হয়ে বিভিন্ন শেয়ার, বন্ড, এবং অন্যান্য নিরাপদ ইনভেস্টমেন্ট প্রোডাক্টে বিনিয়োগ করা হয়।

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটে সাফল্য পেতে কী করতে হবে?

আপনি যদি অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটে সফল হতে চান, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবেঃ

১. গবেষণা

সাইটের বিবরণ ভালোভাবে পড়ুন এবং তার কার্যকলাপ এবং রেটিং যাচাই করুন।

২. ঝুঁকি ম্যানেজমেন্ট

ঝুঁকি কমানোর জন্য একাধিক পোর্টফোলিও বা বিনিয়োগে অর্থ ভাগ করুন।

৩. ধৈর্য রাখা

অনলাইনে বিনিয়োগের ফলাফল ত্বরিত হতে পারে না, তাই আপনাকে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিঃদ্রঃ

পোস্টটি শুধুমাত্র শিখার জন্য করা হয়েছে। কেউ ভুলেও এ ধরনের সাইটে ইনভেস্ট করবেন না। কারণ আমাদের বাংলাদেশে এসব সাইট বৈধ নয়।

আরও পড়ুনঃ কোন গেম খেলে টাকা ইনকাম করা যায়

শেষ কথা

অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট সাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগগুলো অসীম হতে পারে, তবে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে এবং শুধু বিশ্বাসযোগ্য এবং নিরাপদ সাইটগুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে। গবেষণা, ধৈর্য, এবং অভিজ্ঞতা হলো সফল বিনিয়োগের মূল চাবিকাঠি। সবাইকে বলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button