অনলাইন ইনকাম

ট্রাস্টেড ইনকাম সাইট

বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে প্রচুর পরিমাণ লোকেরা ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করেছে। সত্যি বলতে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা কথাটা বলা যতটা সহজ। বাস্তবে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা বিষয়টা ততটা সহজ নয়।ট্রাস্টেড ইনকাম সাইটহাজার ওয়েবসাইটের মাঝে সুন্দর ও ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। আর তাই আজকের আর্টিকেলে ট্রাস্টেড ইনকাম সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ট্রাস্টেড ইনকাম সাইট?

নিচে কিছু ট্রাস্টেড ইনকাম সাইট তুলে ধরা হলোঃ

  • Google AdSense
  • Adsterra
  • YouTube
  • Ezoic
  • Facebook Marketplace
  • Shutterstock
  • Fiverr
  • Google AdMob
  • 2captcha.com
  • Medium.com
  • Swagbucks
  • Dreamstime
  • Freecash
  • YSense

১. Google AdSense

গুগল এডসেন্স হচ্ছে গুগলের দ্বারা পরিচালিত একটি বিজ্ঞাপন প্রদানকারী কম্পিউটার প্রোগ্রাম। গুগল এডসেন্স ওয়েবসাইট মালিকদেরকে তাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করার সুযোগ দেয়। গুগল এডসেন্সে সাইন আপ করে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন কোড বসাতে পারেন।

এরপর গুগল নিজেই আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট ও ভিজিটরদের জন্য প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপনগুলো দেখাতে শুরু করবে। যখন লোকেরা এই বিজ্ঞাপনগুলোর ওপর ক্লিক করবেন তখন আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে টাকা জমা হতে থাকবে। গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনি কি পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে।

যেমনঃ আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি, CTR (Click Through Rate), CPC (Cost Per Click), কি পরিমাণ ভিজিটর পাচ্ছেন এবং কোন দেশের ভিজিটর পাচ্ছেন ইত্যাদি। গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে যা যা করতে হবেঃ

  • প্রথমে আপনাকে ১টি ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগ তৈরি করতে হবে।
  • যেখানে আপনাকে নিয়মিত মানসম্পন্ন আর্টিকেল গুলো পাবলিশ করতে হবে।
  • এরপর আপনার ওয়েবসাইটের সাথে গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্টটি যুক্ত (connect) করতে হবে।
  • আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য গুগল এডসেন্সে সাইন আপ করতে হবে।
  • তারপর গুগল এডসেন্স থেকে প্রাপ্ত ad code গুলো আপনার ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট স্থানে যুক্ত করতে হবে।
  • উদাহরণস্বরূপ যেমনঃ sidebar, header, footer ও inside content ইত্যাদি জায়গায় আপনি বিজ্ঞাপন কোড বসাতে পারেন।

এছাড়াও নিয়মিত নতুন ও ভালো মানের আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে। এতে আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। গুগল এডসেন্সে পেমেন্ট পাওয়ার জন্য আপনার আয় কমপক্ষে $১০০ হতে হবে। আপনার এডসেন্স একাউন্টে ১০০ ডলার জমা হয়ে গেলে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট নিতে পারেন।

 ২. Adsterra

Adsterra হচ্ছে জনপ্রিয় একটি এড নেটওয়ার্ক। যা ওয়েবসাইট মালিকদের তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে করে টাকা আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকে। Adsterra বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন ফরম্যাট, যেমনঃ ডিসপ্লে ব্যানার, সোশ্যাল বার এড, নেটিভ বিজ্ঞাপন, পপ-আন্ডার ও ডিরেক্ট লিংক পাবলিশারদের ওয়েবসাইটে দেখিয়ে থাকে।

বিশেষ কোন কারণে গুগল এডসেন্স যদি আপনার ওয়েবসাইটটিকে approval না করে তাহলে আপনি গুগল এডসেন্সের বিকল্প হিসাবে টাকা আয় করার জন্য এই এড নেটওয়ার্ক ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারেন। Adsterra থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে সবার প্রথম একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে হবে।

যেখানে আপনি নিয়মিতভাবে মানসম্পন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করবেন। এরপর আপনাকে একটি Adsterra একাউন্ট খুলতে হবে ও আপনার ওয়েবসাইটকে এই একাউন্টের সাথে যুক্ত করতে হবে। সাধারণত Adsterra আপনার ওয়েবসাইট যুক্ত করার কিছু সময়ের মধ্যেই অনুমোদন দেয়।

Adsterra গুগল এডসেন্সের মতো ওয়েবসাইট অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করে না। Adsterra ওয়েবসাইট সংযুক্ত করার পর আপনার আর্টিকেলের ভিতর বিজ্ঞাপন সেট আপ করতে হবে। যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইটে দেখানো বিজ্ঞাপন গুলোতে ক্লিক করবে।

আর তখন আপনার adsterra একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হয়ে যাবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন এই এড নেটওয়ার্ক থেকে টাকা আয় করতে হলে আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক থাকতে হবে।

আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ভিজিটর আসবে, বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে, যার ফলে আপনার ইনকামও বৃদ্ধি পাবে। Adsterra তে উপার্জিত টাকা আপনি পেপাল, ওয়েবমানি কিংবা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারেন।

৩. YouTube

বর্তমানে অনলাইনে টাকা আয় করার ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে ইউটিউব সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা এখন খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে গেছে। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল একাউন্ট দিয়ে ইউটিউবে সাইন আপ করতে হবে।

এরপর আপনাকে নিজের সুন্দর একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে হবে। আপনি যেকোন টপিক কিংবা niche এর ওপর আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি বানাতে পারেন। যেমনঃ টেকনোলজি, ভ্লগিং, চিকিৎসা, রেসিপি, ফিটনেস, গেমিং, রিভিউ ও টিউটোরিয়াল ইত্যাদি বিষয়ে ভিডিও বানিয়ে আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন।

অর্থাৎ সহজভাবে বলতে গেলে, আপনার যে বিষয়ের ওপর ভাল knowledge ও experience রয়েছে, সেই বিষয়ে চ্যানেল তৈরি করে খুব তাড়াতাড়ি ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারেন। একটি ইউটিউব চ্যানেল বানানোর পর আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত এবং ধারাবাহিকভাবে আকর্ষণীয় ও তথ্যবহুল সুন্দর কোয়ালিটির ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে হবে।

আর এতে প্রতিদিন আপনার চ্যানেলে নতুন নতুন ভিজিটর আসতে থাকবে ও আপনার views ও subscribers দুটোই দিনে দিনে বেড়ে যাবে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ হলে আপনি ইউটিউব monetization চালু করার জন্য Youtube partner program এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

YouTube পার্টনার প্রোগ্রামে apply করার সময় আপনাকে গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। YouTube পার্টনার প্রোগ্রাম অ্যাপ্রুভ হয়ে গেলে Google এডসেন্সের মাধ্যমে আপনার YouTube চ্যানেলের ভিডিও গুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনার ভিডিওতে যত বেশি ভিউস ও সাবস্ক্রাইবারস আপনার ইউটিউব চ্যানেলে থাকবে, ইউটিউব থেকে আপনার টাকা ইনকামের সম্ভাবনাও তত বেশি বাড়বে। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ কোন ধরনের টাকা বিনিয়োগ কিংবা ডিপোজিট না করেই ফ্রি অনলাইন ইনকাম ওয়েবসাইট ইউটিথেকে প্রতি মাসে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছেন।

ইউটিউবে কাজ করার সুবিধা?

আপনি ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও বানাতে পারবেন। ইউটিউবে সম্পূর্ণ ফ্রিতে নিজের ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন। আপনার পছন্দমতো যেকোন একটি বিষয় বা নিশ নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

অর্থাৎ যে বিষয়ের ওপর আপনার খুব ভাল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। ঠিক সেই বিষয়ে চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। তাছাড়া ইউটিউব থেকে আনলিমিটেড টাকা আয়ে সুযোগ রয়েছে।

৪. Ezoic

Ezoic হলো গুগল এডসেন্সের মতো একটি বিখ্যাত এড নেটওয়ার্ক। যা ব্লগারদেরকে তাদের ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকেন।আপনার যদি ওয়েবসাইটে search engine থেকে খুব ভাল পরিমাণে ট্রাফিক আসে।

তাহলে আপনি Ezoic এড নেটওয়ার্কটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের performance ও earning উভয়ই বাড়িয়ে নিতে পারেন। Ezoic থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে Ezoic এর ওয়েবসাইটে গিয়ে ফ্রিতে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য প্রদান করে সাইন আপ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।

তারপর Ezoic আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক ও গুনগত মান যাচাই করার পরে আপনাকে অনুমোদন দেবে। Ezoic এ অনুমোদন হয়ে গেলে আপনার সাইটে ইজোইকের বিজ্ঞাপন শো করে টাকা আয় করা শুরু করতে পারেন। ইজোইকের মাধ্যমে আয় করা টাকা আপনি Bank transfer, Payoneer, PayPal ইত্যাদি মাধ্যমে তুলতে পারেন।

Ezoic ব্যবহারের সুবিধা?

  • Ezoic আপনাকে গুগল AdSense ও Media.net অন্যান্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কগুলোর সাথে কাজ করতে দেয়, যা আপনার আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • AI প্রযুক্তির মাধ্যমে Ezoic পাবলিশারদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট ও optimize করে থাকে।
  • যা পাবলিশারদের সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট করতে খুবেই সাহায্য করে।
  • আর এই ad network ব্যবহার করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণ pageview এর প্রয়োজন হয় না।
  • নতুন ও ছোটো ওয়েবসাইটেও আপনি Ezoic এর এপ্রুভাল পেতে পারবেন।

৫. Facebook Marketplace

Facebook Marketplace হচ্ছে ফেসবুকের এমন একটি ফিচার। যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের এলাকাভিত্তিক পণ্য ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারেন। ইহা এমন একটি online platform যেখানে আপনি used product/items কিংবা new items ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারেন। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করার জন্য আলাদা কোন ধরনের app download করার প্রয়োজন নেই।

এটি সরাসরি Facebook app কিংবা ওয়েবসাইটের মধ্যেই পাওয়া যায়। ফেসবুক Marketplace থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় নতুন পণ্য বিক্রি, ড্রপশিপিং, ব্যবহৃত পণ্য বিক্রি, হাতের তৈরি পণ্য বিক্রি ইত্যাদি।

ফেসবুক Marketplace থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রোডাক্টের ভালো ছবি ও স্পষ্ট বিবরণ দিয়ে পোস্ট করতে হবে। এবং ক্রেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও সঠিক মূল্য নির্ধারণ ও ভাল সার্ভিস প্রদান করাও সফল হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

একবার ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে আপনার ব্যবসায়টি দাঁড় করাতে পারলে আপনি এটাকে ই-কমার্স দোকান হিসেবে ব্যবহার করে সহজে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।

 ৬. Shutterstock

আপনি যদি ছবি কিংবা ফটো তুলতে খুব পছন্দ করেন এবং আপনার যদি একটি ভাল ডিএসএলআর ক্যামেরা কিংবা ভাল মোবাইলের ক্যামেরা থাকে তাহলে আপনি শাটারস্টক ওয়েবসাইটে আপনার তোলা ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন। শাটারস্টক হলো স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট।

যেখানে বিভিন্ন দেশের ফটোগ্রাফাররা তাদের তোলা ফটো কিংবা ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করার সুযোগ পান। আর এই ফটো সেলিং ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয়ের জন্য আপনাকে প্রথমে শাটারস্টকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। শাটারস্টকে অ্যাকাউন্ট বানানোর পর আপনার প্রোফাইলটি ভালোভাবে সাজাতে হবে।

এরপর কয়েকটি high quality image আপনার একাউন্টে আপলোড করতে হবে। ছবি আপলোডের সময় অবশ্যই category ও description ভালোভাবে দিতে হবে। আপনার ছবি আপলোড হয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ আপনার ফটোগুলো পরীক্ষা ও নিরীক্ষা করে দেখবে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শাটারস্টক আপনার ছবিগুলো অনুমোদন দিয়ে দিবে। একবার অনুমোদন হয়ে গেলে ক্রেতারা আপনার ছবিগুলো ক্রয় করতে পারবে এবং এভাবে স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। শাটারস্টক থেকে টাকা আয় করার সময় যে বিষয় গুলো ফলো করতে হবেঃ

  • আপনার ছবি তোলার শখকে টাকা আয় ক্ষেত্র হিসাবে এই ওয়েবসাইটটি অধিক কার্যকর হবে।
  • এই ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে কোন ধরনের ডিপোজিট কিংবা বিনিয়োগ করতে হবে না।
  • এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ইউনিক এবং উন্নত মানের ফটো বা ছবি আপলোড করতে হবে।
  • প্রতিটি ছবি বিক্রির জন্য ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন পেতে পারবেন।
  • এ ওয়েবসাইটে ছবির পাশাপাশি illustrations, videos vectors ইত্যাদি বিক্রয় করতে পারেন।

৭. Fiverr

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা একটি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ফাইবার। ইহা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফ্রিল্যান্সাররা এখানে একাউন্ট তৈরি করে তাদের প্রদানকৃত সার্ভিস কিংবা পরিষেবার বিবরণ সহকারে গিগ পাবলিশ করেন।

আর এই গিগের মাধ্যমে সার্ভিস প্রদানকারী বা seller এবং সার্ভিস গ্রহণকারীর বা buyer এর মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। আর এই ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যেকোন ধরনের সার্ভিস কিংবা পরিষেবা প্রদান করতে পারেন এবং সেটা গবগ হিসেবে পাবলিশ করতে পারেন।

এরপর যেকোন ক্লায়েন্ট ঐ গিগ এর মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এবং কাজের বিষয়ে আপনার সঙ্গে কথপোকথন করতে পারবে। ফাইবারে একটি গিগের সর্বনিম্ন মূল্য ৫ ডলার। অর্থাৎ এখানে ফ্রিলান্সাররা যেসব সার্ভিস কিংবা পরিষেবা দিয়ে থাকেন সেগুলো ৫ ডলার থেকে শুরু হয়।

ফাইভার প্লাটফর্মে আপনি content writing, logo design, website/app development, digital marketing, graphics design, video editing, programming ইত্যাদি কাজগুলো করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। ধরুন আপনার সুন্দর লোগো ডিজাইন করার অভিজ্ঞতা আছে।

তাহলে আপনি ফাইভারে গিয়ে $৫ থেকে $১০ এর বিনিময়ে ক্লায়েন্টদের লোগো ডিজাইনিং সার্ভিস দিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। ফাইবারে কাজ করে ইনকাম করার জন্য যা যা করতে হবেঃ

  • প্রথমত আপনাকে ফাইবার ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
  • আপনার একাউন্ট বানানো হয়ে গেলে আপনার বিষয়ে যাবতীয় সব তথ্য দিয়ে প্রোফাইল সঠিকভাবে সাজাতে হবে।
  • এরপর আপনি কোন কাজটি করতে চাচ্ছেন কিংবা কি সার্ভিস দিতে চাচ্ছেন, কত টাকা চার্জ করবেন? ও
  • কত দিনের মধ্যে কাজটি শেষ করবেন ও কাজের ডেসক্রিপশন ইত্যাদি সহকারে একটি সুন্দর গিগ তৈরি করে পাবলিশ করতে হবে।
  • এরপর ক্লায়েন্টরা সেই গিগের মাধ্যমে আপনার কাছে সার্ভিসটি অর্ডার করতে পারবেন।
  • আর এভাবে আপনি ফাইভারে কাজ পেতে পারেন।

৮. Google AdMob

গুগল AdMob হলো মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপারদের জন্য একটি অ্যাডভার্টাইজিং প্ল্যাটফর্ম। যা গুগল দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ডেভেলপাররা তাদের মোবাইল অ্যাপসে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে টাকা আয় করতে পারেন। AdMob অ্যাপের ভেতরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে থাকে। যেমনঃ ইন্টারস্টিশিয়াল বিজ্ঞাপন, রিওয়ার্ডেড ভিডিও বিজ্ঞাপন, ব্যানার বিজ্ঞাপন ও নেটিভ বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।

গুগল এডমব থেকে টাকা আয় করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করতে হবে। ইহা অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস কিংবা উভয় প্ল্যাটফর্মের জন্য হতে পারে। অ্যাপে বিজ্ঞাপন সেট আপ করার জন্য আপনাকে একটি গুগল AdMob একাউন্ট তৈরি করতে হবে।

এরপর এডমব একাউন্টে ad unit তৈরি করতে হবে ও ad code গুলো আপনার অ্যাপে বসাতে হবে। সবশেষে Google Play Store থেকে আপনার মোবাইল অ্যাপটিকে পাবলিশ করতে হবে। একটা বিষয় মনে রাখবেন, যত বেশি পরিমাণ আপনার অ্যাপটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করবে, তত বেশি পরিমাণে টাকা আয় আপনার হবে।

আর এজন্য অবশ্যই আপনার অ্যাপটি বিভিন্ন জায়গায় প্রমোট করতে হবে, যাতে বেশি সংখ্যক লোকেরা আপনার অ্যাপটি তাদের মোবাইলে ইনস্টল করে ব্যবহার করে। আপনার গুগল এডমব একাউন্টে যখন $১০০ ডলার জমা হবে, তখন সেই টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নিতে পারেন।

৯. Dreamstime

Dreamstime হচ্ছে একটি জনপ্রিয় স্টক ফটোগ্রাফি প্ল্যাটফর্ম। যেখানে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফাররা তাদের বানানো ফটোগ্রাফ, ইলাস্ট্রেশন ও ভিডিও বিক্রি করতে পারেন। আর এই ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে contributor হিসেবে এই সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

এই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর আপনি আপনার তৈরি করা ফটোগ্রাফ, ভেক্টর কিংবা ভিডিও ফাইল আপলোড করতে পারেন। আর একটি ছবির বিনিময়ে আপনাকে কত টাকা দেওয়া হবে সেটা আসলে ছবির সাইজ ও ছবিটি আসলে কতবার ক্রয় করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করবে।

আপনি যদি একজন ভাল মানের ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন। তাহলে এই stock photography সাইটের exclusive photographers program এ যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত টাকা আয় করতে পারেন। Dreamstime এ ইনকামকৃত টাকা পেপাল, Payoneer কিংবা অন্যান্য পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে তুলতে পারেন।

১০. Freecash

Freecash হচ্ছে এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে ফ্রিতে অনলাইনে টাকা আয় করার জন্য ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের ছোটো ছোটো কাজ সম্পন্ন করে কিংবা পুরস্কার জিততে পারেন। আর এই সাইটটি মূলত মাইক্রো-টাস্ক, অফারওয়াল, সার্ভে ও অন্যান্য বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করার মাধ্যমে পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ দেয়।

যা পরবর্তীতে নগদ অর্থ, গিফট কার্ড কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রূপান্তরিত করা যায়। আর আপনি চাইলে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে অবসয় সময়ে কাজ করে এই ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করতে পারেন। কাজ করার জন্য প্রথমে আপনাকে Freecash ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফ্রিতে একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।

আপনার ফ্রি ক্যাশে একাউন্ট বানানোর পর আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন। যেমনঃ গেমস খেলা, সাবস্ক্রিপশন নেওয়া, অ্যাপস ডাউনলোড করা কিংবা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে সাইন আপ করার মতো কাজগুলো করতে হবে। এছাড়াও এই সাইটে বিভিন্ন ধরনের সার্ভে সম্পন্ন করে পয়েন্টস অর্জন করতে পারবেন। তবে এ সাইটে কিছু মাইক্রো টাস্ক পাওয়া যায়।

যেমনঃ অ্যাড ক্লিক করা কিংবা ছোট ছোট কাজ ও ভিডিও দেখা যা সহজে ও দ্রুত করা যায়। আর এই ওয়েবসাইটে আপনি আপনার বন্ধুদেরকে রেফার করে ভাল পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারেন। আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ পয়েন্টস জমা হলে আপনি এগুলো নগদ অর্থে Bitcoin, Ethereum, PayPal, Skrill বিভিন্ন ধরনের গিফট কার্ডে যেমনঃ Amazon, Google Play, Steam ইত্যাদি।

কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা পেমেন্ট নিতে পারেন। অর্থাৎ আপনার এই ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনার খুব বেশি একটা অভিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনার যদি ইন্টারনেট ব্যবহারে সাধারণ কিছু দক্ষতা থাকে, তাহলেই আপনি এই মাইক্রো জব ওয়েবসাইটটিতে সহজে কাজ করতে পারেন।

১১. Medium.com

Medium হচ্ছে একটি অনলাইন কনটেন্ট পাবলিশিং প্ল্যাটফর্ম। যেখানে লেখকরা তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। মিডিয়াম থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য মূলত Medium Partner Program (MPP) এ যুক্ত হতে হবে। Medium Partner Program হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম বা পদ্ধতি। যার মাধ্যমে লেখকরা তাদের প্রকাশিত আর্টিকেলের জন্য টাকা ইনকাম করতে পারেন।

মিডিয়ামে থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে ও আপনার একটি অডিয়েন্স বেস তৈরি করতে হবে। মিডিয়াম এর প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ প্লান রয়েছ। যেসব লোকেরা medium premium membership ব্যবহার করছেন, তারা কতটুকু সময় ধরে আপনার লেখা পোস্টগুলো পড়ছেন, এর উপর নির্ভর করে মিডিয়াম, প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ ফী থেকে কিছু অংশ তাদের লেখকদের দিয়ে থাকেন।

মিডিয়াম থেকে টাকা আয় করার আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে medium affiliate program. অর্থাৎ আপনি যদি রেফার করার মাধ্যমে নতুন নতুন কোন members দের মিডিয়াম premium membership এ যুক্ত করাতে পারেন। তাহলে তাদের মেম্বারশিপ ফি থেকে কিছু অংশ আপনাকে কমিশন হিসেবে দেওয়া হয়।

Medium-এ কাজ করার সুবিধাগুলো কি কি?

  • মিডিয়ামে সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
  • মিডিয়াম প্লাটফর্মে সহজে নিজের অডিয়েন্স বেস তৈরি করতে পারবেন।
  • মিডিয়াম থেকে আপনার নিজস্ব ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট থেকে কোয়ালিটি ট্রাফিক নিতে পারবেন।

১২. 2captcha.com

ক্যাপচা পূরণ করে টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট (2Captcha)। ইহা এমন একটি অনলাইন ইনকাম সাইট যেখানে আপনি ক্যাপচা টাইপিং করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। আর এই কাজটি সাধারণত ডাটা এন্ট্রি কাজের মতো। যেখানে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের captcha code দেখতে হবে ও সেগুলো সঠিকভাবে টাইপ করতে হবে।

এই ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে আপনাকে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি ফ্রিতে account বানাতে হবে। এই ওয়েবসাইটে একাউন্ট খোলার পর আপনাকে বিভিন্ন ক্যাপচা দেওয়া হবে, যেমনঃ recaptcha, image captcha, text captcha ইত্যাদি। যেগুলো আপনাকে সঠিকভাবে টাইপ করতে হবে।

আর প্রতিটি ক্যাপচা সমাধানের জন্য আপনাকে $০.০০১ থেকে $০.০৫ পর্যন্ত দেওয়া হবে। যদিও ইনকামের পরিমাণ খুব বেশি নয়, তবে নিয়মিত এবং দ্রুত কাজ করলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি 2Captcha এর রেফারেল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে আরও বেশি পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। আপনার একাউন্টে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হবে। তখন আপনি PayPal ও Payoneer এবং অন্যান্য পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারেন।

যাদের হাতে সময় বেশি থাকে ও কোন ধরনের দক্ষতা ছাড়াই ইনকাম করতে চান, তাদের জন্য এই ওয়েবসাইটটি একটি উপযুক্ত টাকা ইনকামের রাস্তা হতে পারে।

১৩. Swagbucks

Swagbucks হচ্ছে online rewards প্ল্যাটফর্ম। যেখানে users রা বিভিন্ন ধরনের কাজ (task) সম্পন্ন করে পয়েন্টস আয় করতে পারেন। এবং এই পয়েন্টসগুলো cash কিংবা গিফট কার্ডে রূপান্তর করতে পারেন।

Swagbucks এই মাইক্রো-জব ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য ভিডিও দেখা, অনলাইন কেনাকাটা, গেম খেলা, web search করা, সার্ভে পূরণ করা, অ্যাপস ডাউনলোড, ফ্রি ট্রায়াল নেওয়া, বিভিন্ন ধরনের অফার কমপ্লিট করা ও নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে সাইন আপ করা ইত্যাদি।

এছাড়াও এই ওয়েবসাইটের রেফারেল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে নতুন নতুন ব্যবহারকারীদের ওয়েবসাইটে একাউন্ট করিয়ে অতিরিক্ত টাকা আয় করতে পারেন। যখন আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ swagbucks points জমা হবে। তখন আপনি সেগুলো Amazon, Walmart ও PayPal ইত্যাদি জনপ্রিয় গিফট কার্ডের জন্য redeem করতে পারেন।

১৪. ySense

ySense হলো একটি অনলাইন মাইক্রোটাস্ক ওয়েবসাইট। যেখানে পার্ট টাইম ছোটো খাটো অনলাইন কাজগুলো করে টাকা আয় করা যায়। বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠান এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন জরিপ প্রদান করে থাকে। আর এই জরিপ গুলো পূরণ করার বিনিময়ে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পে করে থাকে।

ySense ওয়েবসাইটের উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হচ্ছে ভিডিও দেখা, ওয়েবসাইট ভিজিট করা, অ্যাপ ডাউনলোড করা, ফ্রি ট্রায়াল নেওয়া ইত্যাদি। আর এই ধরনের অফারগুলো সম্পন্ন করে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়াও ySense ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন ধরনের ছোটো ছোটো কাজ।

যেমনঃ ইমেজ ক্যাপশনিং, ডেটা এন্ট্রিসহ অন্যান্য সহজ কাজগুলো করতে পারেন। এগুলোর পাশাপাশি এই ওয়েবসাইটে referral program থেকে টাকা আয় করতে পারেন। ySense থেকে উপার্জিত টাকা আপনি PayPal ও Payoneer অথবা বিভিন্ন ধরনের gift card এর মাধ্যমে cashout করতে পারেন।

PayPal এর মাধ্যমে টাকা পেতে হলে আপনার একটি ভ্যালিড PayPal একাউন্ট থাকতে হবে। পার্ট টাইম কাজ করার জন্য এই ওয়েসাইটটি উপযুক্ত এবং এখানে ধরনের টাকা ইনভেস্টমেন্ট না করে ফ্রিতেই টাকা আয় করা যায়।

শেষ কথা

আজকের আর্টিকেলে আমি ট্রাস্টেড ইনকাম সাইট গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এই ধরনের সাইটগুলো থেকে আমি নিজেও প্রতিনিয়ত ভাল পরিমাণে টাকা আয় করেছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button