অনলাইন ইনকাম

বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম সাইট

আমাদের সকলের টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই টাকা আয় করতে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আপনি এখন ঘরে বসেই আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারে মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন।বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম সাইটকিন্তু প্রশ্ন হলো টাকা ইনকাম কিভাবে করবো? আজকে এই পোস্টে ১১টি বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম সাইট?

অনলাইনে টাকা আয় করা যায় এমন ১১টি বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম সাইট সম্পর্কে নিচে ধারণা দেওয়া হলোঃ

  • Google Adsense
  • CPA Marketing
  • Youtube
  • Facebook
  • Upwork
  • Amazon
  • Fiverr
  • Kolotibablo
  • Megatypers
  • Prizerebel

Google Adsense

গুগল এডসেন্স হলো গুগলেরই একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। সাধারণত গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে এড দেখিয়ে টাকা আয় করা যায়। ধরুন আপনার একটি মনিটাইজ করা ইউটিউব চ্যানেল আছে। তাহলে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এড দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। তাছাড়া

আপনার ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রেও একইভাবে আপনি গুগল এডসেন্সের শর্ত মেনে সেখানে এড দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। গুগল এডসেন্স ২ ধরনের হয়। একটি হোস্টেড একাউন্ট এবং অপরটি নন হোস্টেড একাউন্ট। নন হোস্টেড একাউন্ট সম্পূর্ণ আপনার নিজের তত্তাবধানে থাকবে।

গুগল এডসেন্সে ১০$ হয়ে গেলে গুগল থেকে পিন ভেরিফিকেশন এর মেসেজ আসবে। এরপর আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্ট এড করে $১০০ ডলার হলে টাকা ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে পারেন।

CPA Marketing

CPA এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Cost per Action। মানে আপনি একটি কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে কিছু পরিমাণ কমিশন পাবেন। ইহা একটি অনলাইন মার্কেটিং কৌশল। আর সিপিএতে কোম্পানিগুলো নিজেদের পণ্যের প্রচার কাজে পাবলিশার কিংবা বিজ্ঞাপন প্রচারকারীদের সাহায্য নেন।

কোম্পানিগুলো আপনাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ দিবে। যেমনঃ অ্যাপস ডাউনলোড, ইমেইল সাবমিশম, ফর্ম পূরন জরিপ পূরন ইত্যাদি। ইন্টারনেটে থাকা অন্যান্য মাধ্যমগুলোর তুলনায় এখানে আপনি সহজে টাকা আয় করতে পারেন। সিপিএ মার্কেটিং করতে আপনার একটি ব্লগ অথবা ওয়েবসাইট লাগবে। আপনার সাইটে মোটামুটি ভালো পরিমানে ট্রাফিক থাকতে হবে।

এরপর একটি ভালো সিপিএ নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে হবে। এরপর সিপিএ নেটওয়ার্ক থেকে কাজগুলো নিয়ে নিজের সাইটে করানোর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে ওয়েবসাইট ছাড়াও সিপিএ মার্কেটিং করতে পারেন।

সিপিএ মার্কেটিং আপনি ২টি উপায়ে করতে পারেন। টাকা খরচ করে ও ফ্রিতে সিপিএ মার্কেটিং করতে পারেন। এখানে আপনি ইনভেস্ট করেও টাকা আয় করতে পারেন। আবার কোন ধরনের ইনভেস্ট ছাড়াও টাকা ইনকাম করতে পারেন।

YouTube

ইউটিউব থেকে বর্তমানে ভাল পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায়। ইউটিউব হলো গুগলের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। চ্যানেল খুললেই যে আপনার টাকা আয় শুরু হবে এমনটা নয়।

আপনাকে কিছু শর্ত পূরনের মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ করতে হবে। মনিটাইজ করতে হলে আপনার চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম থাকতে হবে। তাহলেই আপনার ইউটিউব চ্যালেন মনিটাইজড হবে এবং আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

তাছাড়া আপনি ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের স্পন্সরশিপের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। স্পন্সরশিপের মানে হলো আপনি কোন একটি পণ্যের রিভিউ বা প্রমোশন করে দিবেন। আর ওই কোম্পানি আপনাকে কিছু টাকা দিবে।

Facebook

ফেসবুক হলো যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এখন এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল যিনি ফেসবুক ব্যবহার করেন না। ফেসবুক বিনোদন ও যোগাযোগের জন্য হলেও আপনি এখান থেকেও টাকা আয় করতে পারেন। ফেসবুকে বিভিন্নভাবে টাকা আয় করা যায়। যেহেতু ফেসবুক অনেক বড় একটি নেটওয়ার্ক।

এখানে আপনি ব্যবসায় করতে পারেন। এখানে আপনি নিজের বা অন্য কারোও পণ্য বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন।তাছাড়া আপনার যদি নিজের ফেসবুক পেজ থাকে এবং সেখানে অনেক লাইক, কমেন্টস, শেয়ার থাকে তাহলে আপনি অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন।

এছাড়াও আপনারা বিভিন্ন পণ্যের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটাতে। ফেসবুক কনন্টেন মনিটাইজেশন করে নিজের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারেন।

Upwork

আপওয়ার্ক হলো ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য অনেক ভাল একটি ওয়েবসাইট। এখানে বিভিন্ন ধরনের ক্লায়েন্ট তাদের কাজ পোস্ট করেন। এরপর আপনি যদি সে কাজগুলো পারেন এবং আপনার যদি ক্লায়েন্টের পোস্ট দেওয়া পারিশ্রমিক পছন্দ হয়। আপনি তাকে কাজের প্রস্তাব দিতে পারেন।

এরপর আপনি যদি সিলেক্টেড হন কাজ করে দেওয়ার জন্য। তাহলে আপনি কাজ করে দিলে ইনকামকৃত টাকা আপওয়ার্ক ওয়ালেটে আসবে। এরপর আপনি সেখান থেকে টাকা আপনি ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পারেন।

এখানে অল্প সময় দেওয়ার মাধ্যমে আপনি টাকা আয় করতে পারেন। আপওয়ার্কে যেহেতু আপনি অনেক বিদেশি ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করবেন। আর তাই আপনার পেমেন্টও বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

Amazon

আমাজন হলো আমেরিকান একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। ইহা একটি ইকমার্স প্লাটফর্ম। আপনি আমাজন থেকেও টাকা আয় করতে পারেন। এখানে আপনি আপনার নিজের পণ্য বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্যের হোলসেল দিতে পারেন। এছাড়াও আমাজনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, নিজের লেখা বই প্রকাশ করতে পারেন। এছাড়াও আরোও অনেক ধরনের কাজের মাধ্যমে আমাজন থেকে টাকা আয় করা যায়।

Fiverr

ফাইবার হলো ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। ইহা মূলত ক্লায়েন্ট ও ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে যোগাযোগ অথবা সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। মনে করেন একজন ক্লায়েন্টের লোগো ডিজাইন কিংবা কন্টেন্ট রাইটিং এর একটি কাজ করতে হবে। কিন্তু তিনি লোগো ডিজাইন বা কন্টেন্ট রাইটিং অন্য কাউকে দিয়ে করাতে চান।

তখন তিনি ফাইভারে একটি পোস্ট করবেন ওই কাজের বিস্তারিত এবং পারিশ্রমিক উল্লেখ করবেন। তখন আপনি যদি লোগো ডিজাইন বা কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারেন তাহলে সেখানে আবেদন করবেন। এরপর সে আপনাকে দিয়ে লোগো ডিজাইন বা কন্টেন্ট রাইটিং করাবে।

এবং এরপর আপনার একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দিবে। এভাবে কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, কপি রাইটিং ইত্যাদি আরো অনেক কাজ ফাইবারে করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

Swagbucks

Swagbucks ওয়েবসাইটে বিভিন্ন জরিপ পূরণ করে, ভিডিও দেখে, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে, ডেইলি চেকলিস্ট পূরন করে টাকা আয় করতে পারবেন। Swagbucks এ আপনি এসবি পাবেন। SB মানে হলো (swagbucks special currency)। ১০০ এসবি = ১$ এর কাজ করতে হবে। আপনার ৩০০ এসবি মানে ৩$ হলে আপনি পেমেন্ট নিতে পারবেন।

Kolotibablo

Kolotibablo হলো পার্টটাইম টাকা আয় করার একটি ওয়েবসাইট। ইহা ২০০৭ সালে চালু হয়। যাদের অবসর সময় থাকে তারা এই ওয়েবসাইটে কাজ করতে পাররন। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের Captcha লিখে টাকা আয় করতে পারেন। টাকা আয় করার জন্য এখানে আপনাকে প্রতিদিন ১০০০টি Captcha ও সমাধান করতে হবে।

আসলে ১০০০টি ক্যাপচা পূ্রণ করা মোটেও কঠিন কিছু না। অনেকে দিনে ৩০০০টি Captcha ও সমাধান করেন। এই ওয়েবসাইটে আপনাকে কোন ধরনের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না। এখানে আপনি ১০০০টি Captcha সমাধান করলে ০.৪$ পাবেন।

Megatypers

Megatypers হলো এমন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম৷ যা সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেটা এন্ট্রি পরিষেবা প্রদান করেন। Megatypers এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্ক্যান করা কাগজপত্রগুলোকে সম্পাদনাযোগ্য ডিজিটাল নথিতে রূপান্তর করে তাদের ক্লায়েন্ট এর ডিজিটাইজেশনের প্রয়োজনীয়তাকে সমর্থন করা।

megatypers.com এর মূল পরিসেবাগুলোর মধ্যে ভয়েস থেকে টেক্সটে ট্রান্সক্রিপশন ও ইমেজ টু টেক্সট শনাক্তকরণ। আপনি যদি একবার Megatypers থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। তাহলে আপনাকে একটি ক্যাপচা ছবি দেওয়া হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছবিটি সমাধান করবেন।

যেহেতু আমি আগে উল্লেখ করেছি যে Megatypers বিজ্ঞাপন দিয়েছে যে আপনি ক্যাপচা সমাধানের জন্য প্রতি মাসে $২৫০ থেকে $৩০০ আয় করতে পারবেন। তারা প্রতি ১০০০ ক্যাপচারের জন্য আপনাকে $.৮০ থেকে $২.০ দেবে।

Prizerebel

প্রাইস নেভেল ওয়েবসাইটটি কোন ধরনের টাকা ইনভেস্ট ছাড়া বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারেন। এই কোম্পানিটি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে ১৫ মিলিয়নেরও বেশি সদস্য রয়েছে৷ এই ওয়েবসাইটে সদস্যদের জরিপ পূরন ও বিভিন্ন ধরনের সাধারণ কাজগুলো সম্পূর্ণ করার পর টাকা প্রদান করে।

শেষ কথা

পরিশেষে একটি কথা বলতে পারি, উপরের সবগুলো ওয়েবসাইট খুবেই বিশ্বাসযোগ্য। এখানে কোন ধরনের টাকা হারানোর ঝুঁকি নেই। আর তাই আপনি খুব সহজেই একটু পরিশ্রম ও বুদ্ধি খাটিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

A Friendly Request: Please Consider Disabling Your Ad Blocker