কিশোরগঞ্জ জেলার নামকরণের ইতিহাস
বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জেলা কিশোরগঞ্জ। এ জেলার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা মত, ইতিহাস ও জনশ্রুতি, যা কালের প্রবাহে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রচলিত হয়েছে।কিশোরগঞ্জ নামটির উৎপত্তি কীভাবে হলো, তা নিয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক সূত্র, স্থানীয় কিংবদন্তি এবং ভাষাগত ব্যাখ্যা।
কিশোরগঞ্জ জেলার নামকরণের ইতিহাস?
কিশোরগঞ্জের ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রাচীনকালে এই এলাকা কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে পাল, বর্মণ ও সেন রাজারা এই অঞ্চল বা এর কিছু অংশ শাসন করেন।
পরবর্তীতে কোচ, হাজং, গারো এবং রাজবন্দিদের অধীনে ক্ষুদ্র স্বতন্ত্র রাজ্য গঠিত হয়। ৬ষ্ঠ শতকে বত্রিশ অঞ্চলের বাসিন্দা শ্রী কৃষ্ণদাশ প্রামাণিকের পুত্র নন্দকিশোর ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে একটি গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন। এই গঞ্জ থেকেই পরবর্তীতে ‘কিশোরগঞ্জ’ নামটির উৎপত্তি ঘটে।
এই শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নরসুন্দা নদী। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কিশোরগঞ্জ একটি প্রাচীন শহর ও জেলা সদর।
প্রশাসনিক কাঠামো
- কিশোরগঞ্জ ১৮৬০ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
- ১৯৮৪ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঘোষিত হয়।
- কিশোরগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে।
বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলায় রয়েছেঃ
- ১৩টি উপজেলা
- ৮টি পৌরসভা
- ১০৮টি ইউনিয়ন
- ১,৭৪৫টি গ্রাম
ভূগোল ও নদ-নদী
কিশোরগঞ্জ নদী ও হাওরবেষ্টিত একটি জেলা। এর উল্লেখযোগ্য নদীগুলো হলোঃ
- পুরাতন ব্রহ্মপুত্র
- মেঘনা
- কালনী
- সুতী
- নরসুন্দা
- ঘোড়াউত্রা
- ধনু
- বৌলাই
- আড়িয়াল খাঁ
অর্থনীতি
- কিশোরগঞ্জের অর্থনীতি মূলত হাওরের ওপর নির্ভরশীল।
- হাওরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মাছ উৎপন্ন হয়, যা জাতীয় চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- এ ছাড়াও ধান, পাট ও বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপন্ন হয়।
- উৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ ও রপ্তানি করা হয়।
আরও পড়ুনঃ শেরপুর জেলার নামকরণের ইতিহাস
জলবায়ু
- কিশোরগঞ্জে উষ্ণ জলবায়ু বিরাজমান।
- গড় তাপমাত্রা: ২৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত: ২২৫০ মি.মি.
- গ্রীষ্মকালে শীতের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হয়।